॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশায় এয়াকুব আলী চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারে গত ২৬শে আগস্ট সকালে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পাংশা পৌরসভার মেয়র আব্দুল আল মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এলাকার কৃতি সন্তান বাংলাদেশের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, এয়াকুব আলী চৌধুরী রচিত ধর্মের কাহিনী, নূর নবী, শান্তিধারা ও মানবমুকুট গ্রন্থসমূহ আমি পড়েছি। এসব বই পড়লে পাঠক চিত্ত অতৃপ্ত হয় না। দেশে বিদেশে নানা ধরণের লাইব্রেরী এবং পাংশার বাহাদুরপুরে তরুণ সংঘ ও পাঠাগার, হাবাসপুরের বাণী পাঠাগারের নানা তথ্য উল্লেখ করে মোহাম্মদ আবু হেনা বলেন, এখানে প্রথিতযশা সাহিত্যিক এয়াকুব আলী চৌধুরীর নামে সমৃদ্ধ পাঠাগারে পাঠককুল সৃষ্টি করতে হবে। টেকনোলজি, বিনোদন, ডিটেকটিভসহ নানা বৈচিত্রময় বইয়ের সমাহারে লাইব্রেরী সমৃদ্ধ করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক লোকজন, পাঠক উপযোগী বই রাখতে হবে। আর ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ জাগাতে হবে। কারণ বই হচ্ছে জ্ঞানের আলো। আমরা আলোকিত মানুষ গড়তে চাই। এ জন্য আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলনে সমৃক্ত হতে হবে। মোহাম্মদ আবু হেনা বলেন, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকেই স্কুলের লাইব্রেরী থেকে বই নিয়ে পড়েছি এবং এখন পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে বই পড়ে সময় কাটাই। ১৯৪৯ সালে হাবাসপুর কে.রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়াকালীন সময়ে সেখানকার বাণী পাঠাগার থেকে বই নিয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করেন মোহাম্মদ আবু হেনা। দেশ বিদেশের প্রথিতযশা লেখকদের বই কিনে নিজ বাড়ীতে ব্যক্তিগত লাইব্রেরী গড়ে তোলার স্মৃতিচারণ করেন তিনি। এয়াকুব আলী চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারে পর্যাপ্ত বই, আলমারী ও এসি প্রদান করে পাঠাগার সমৃদ্ধকরণে বিশেষ অবদান রাখায় ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিনকে ধন্যবাদ জানান মোহাম্মদ আবু হেনা।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও দাতা ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিন বলেন, বই আমার বড় বন্ধু। জীবন চলার অনুপ্রেরণা। বই আমাকে লাইব্রেরী মুখী করেছে। নিজ গ্রাম কলিমহরে সর্বধর্মীয় লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রম নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিনের সহধর্মিনী নিলুফার রফিক বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মানে পাঠাগার বা লাইব্রেরীর ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, হতাশা থেকে বের হয়ে আসার মহাঔষধ হলো বই পড়া।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আইডিয়াল গার্লস কলেজের প্রভাষক লিটন কুমার বিশ্বাস।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ আবু হেনাকে পাংশা পাইলট গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শান্তনা দাস ও বিশেষ অতিথি ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিনকে আইডিয়াল গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মান্নান ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক এয়াকুব আলী চৌধুরীর নিকটাত্মীয় নওশাদ আলী(বাবুল চৌধুরী), রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম কুমার কুন্ডু, অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র বসু, অধ্যক্ষ এস.এম কায়কোবাদ, অধ্যাপক নিরঞ্জন কুমার দাস, সৈয়দ নূর-ই-আলম ইমরোজ, চিত্ত রঞ্জন কুন্ডু, কাজী আসকার দানীয়েল সীপার, শিবনাথ সরকার, সুশীল কুমার মুদী, মোঃ মোতাহার হোসেন, সুব্রত কুমার দাস সাগর, নির্মল কুন্ডু, সুব্রত কুমার দে, মুহম্মদ ফিরোজ হায়দারসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।