সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে ভরা বর্ষায়ও ইলিশের দেখা নেই

  • আপডেট সময় বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮

॥আবুল হোসেন॥ ইলিশ মাছ সবার পছন্দ। তারপর যদি হয় পদ্মার ইলিশ, তাহলে তো কথাই নেই। পদ্মার ইলিশ সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা সবখানেই বেশী। কিন্তু এই ভরা বর্ষায়ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে সেই বিখ্যাত ইলিশের দেখা মিলছে না। ইলিশ না পেয়ে জেলেরা নদী থেকে হতাশ হয়ে ফিরছে। অথচ এই মৌসুমে অন্যান্য বছর অনেক ইলিশ মাছ ধরা পড়তো। জেলেরা সাত-সকালে জাল নিয়ে নদীতে নামলেও হাতে গোনা কয়েকটা মাছ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। এতে তাদের দৈনন্দিন খরচও মিটছে না।
গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য দপ্তরের হিসাব মতে, উপজেলায় তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ১হাজার ৫৭০ জন। তালিকার বাইরে রয়েছে আরো অনেক জেলে। এসব জেলের অন্ততঃ ৩শতাধিক নৌকা রয়েছে, যা দিয়ে তারা ইলিশ শিকার করে।
উপজেলার দৌলতদিয়া এবং দেবগ্রাম অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শুষ্ক মৌসুমে অন্যান্য মাছ শিকার করলেও নদীতে বর্ষার পানি আসায় জেলেরা ইলিশ শিকারে পদ্মায় নামতে শুরু করেছে। নদীতে জাল ফেলে মাছ শিকারের চেষ্টা করলেও তেমন ইলিশ পাচ্ছে না। অধিকাংশ জেলেরা মহাজন বা আড়তদারদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে, কেউবা শিকার করা মাছ দেওয়ার চুক্তিতে নদীতে নামছে। কিন্তু ইলিশের দেখা না পেয়ে তারা বিপাকে পড়েছে। বাধ্য হয়ে অনেকে এ পেশা পরিবর্তন করে বিকল্প পেশায় চলে যাচ্ছে।
দৌলতদিয়ার জেলে শাহজাহান শেখ বলেন, ছোট থেকেই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চালাই। বছরের অন্যান্য সময় নদীর মাছ শিকার করলেও বর্ষাকালে নেমে পড়ি ইলিশ শিকারে। এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জাল তৈরী করে অংশীদারদের নিয়ে মাছ শিকারের জন্য নদীতে যাই। কিন্তু নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় এখন আমি মহাবিপাকের মধ্যে আছি। না পারছি দেনা পরিশোধ করতে, না পারছি অন্য কাজ করে সংসার চালাতে। ছোটবেলা থেকে শিখেছি কিভাবে মাছ ধরতে হয়। কিন্তু নদীতে মাছ নাই।
দৌলতদিয়া মাছ বাজারের ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, প্রতি বছর এই মৌসুমে পদ্মা নদী ইলিশে ভরপুর থাকে। আগে বর্ষাকালে প্রতিদিন স্থানীয় জেলেরা নদী থেকে নৌকা ভরে মাছ নিয়ে আসতো। তবে কয়েক বছর ধরে ১০ থেকে ১৫ মণের বেশী ইলিশ আনতে পারেনি। তার আগে প্রতিদিন শত শত মণ ইলিশ ধরা পড়তো। দিন দিন গোয়ালন্দের সেই বিখ্যাত পদ্মার ইলিশ হারিয়ে যাওয়ায় অনেক জেলে পেশা পরিবর্তন করেছে। তারা মাছ শিকারের পরিবর্তে ঘাট এলাকায় অন্যান্য কর্মযজ্ঞের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে ইলিশের দেখা মিলছে না বললেই চলে। প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৮-১০ কেজি করে ইলিশ পাচ্ছে। যে কারণে জেলে নৌকার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। কয়েক বছর আগে ইলিশ ধরতে প্রায় ৩শ থেকে ৪শটি নৌকা নিয়মিত মাছ শিকার করতো। বর্তমানে তা কমে ২শ থেকে থেকে ৩শটিতে দাঁড়িয়েছে মাত্র।
পদ্মায় ইলিশ না পাওয়া প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল শরীফ বলেন, পদ্মা নদীতে সেই গভীরতা নেই। এছাড়া রয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং মনুষ্যসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতা। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হলেও তা অমান্য করে শিকার করা হয়। সমুদ্র থেকে নদীতে আসার সময়ও পথিমধ্যে জালে আটকা পড়াসহ নানা কারণে ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!