॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে মমতাজ বেগম নামে এক গৃহবধু (২০)কে নির্যাতনের পর বিদ্যুতের তারে পেচিয়ে শক লাগিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৩শে জুন দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিহত গৃহবধু মমতাজের মা পাখি বেগম বাদী হয়ে গত ১০ই জুলাই রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য রাজবাড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মিসপিটিশন নং-২৬২/১৮। ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ১১(ক)/৩০। আসামীরা হলো ঃ রাজাপুর গ্রামের ছয়েদ মল্লিকের ছেলে গিয়াস মল্লিক(২৭), আহম্মদ মল্লিক(৩০), ছয়েদ মল্লিক(৫৫) ও তার স্ত্রী খুশি বেগম।
জানাযায়, গিয়াস মল্লিকের সাথে ৩বছর আগে একই গ্রামের ছোবাহান মোল্লার মেয়ে মমতাজ বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ছোবাহান মোল্লা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নগদ ১লক্ষ টাকা, আসবাবপত্র ও স্বর্ণের গহনা জামাই গিয়াসকে উপহার দেন। কিন্তু বিয়ের পর গিয়াস পর নারীতে আসক্ত হয়ে এবং জুয়া খেলে শ^শুর বাড়ী থেকে যৌতুক বাবদ পাওয়া ১লক্ষ টাকা ও স্বর্ণের গহনা নষ্ট করে ফেলে। এরপর থেকে আবারো যৌতুক দাবী করে সে মমতাজকে নির্যাতন করতো। আর এ নির্যাতন সহ্য করেই মমতাজ স্বামীর ঘর করে আসছিল। অবশেষে ঘটনার কিছু দিন আগে গিয়াস ও তার পরিবারের লোকজন মমতাজকে নির্যাতন করে দেড় বছরের শিশু সন্তানসহ বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। ফলে উপায় না পেয়ে সে তার বাবার বাড়ীতে গিয়ে উঠে। এরপর ঘটনার আগের দিন গিয়াস ও তার পরিবারের লোকজন ওই বাড়ীতে গিয়ে মমতাজকে আর নির্যাতন করবে না বলে তাকে নিয়ে আসে। এরপর বাড়ীতে এনেই ওই দিনই তারা মমতাজের ওপর আবারো নির্যাতন শুরু করে। পর দিন গত ২৩শে জুন রাতে তারা ১লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে মমতাজের শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাপা মারপিট করে। রাতভর নির্যাতনের পর এক পর্যায়ে তারা তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বাড়ীর অরক্ষিত বিদ্যুতের তারে তাকে ছুরে মারে। এতে সেই ওই তারে পেচিয়ে শক লেগে মারা যায়।
এ ঘটনায় মমতাজের মা বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।