॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আগামী ১৪ই জুলাই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন(১ম রাউন্ড)-এ রাজবাড়ী জেলায় ১লাখ ২৪হাজার ১৮৪জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন(১ম রাউন্ড) সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজবাড়ী সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে গতকাল ৯ই জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন সভা সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্সের সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশন সভায় সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুরুল হক, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি খান মোঃ জহুরুল হক এবং বিটিভি’র প্রতিনিধি মোঃ সানাউল্লাহসহ জেলা পর্যায়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ কাজী শফিউল আজম শুভ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিভিল সার্জন অফিসের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোকারেমা মাঞ্জুরা।
সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স বলেন, বছরে ২বার করে এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। ক্যাম্পেইনে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সঙ্গে পুষ্টি বিষয়ক বার্তা প্রচার করা হয় বলে ‘এ প্লাস’ নামকরণ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দু’চার জন শিশু যে কোন সময় অসুস্থ্য হতে পারে। সেটি ক্যাম্পেইনের সময় হলে অনেকে এর সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে। এ ধরণের ঘটনা ঘটলে স্বাস্থ্যকর্মী বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় জানানো হয়, আগামী ১৪ই জুলাই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে(১ম রাউন্ড) রাজবাড়ী জেলার ৫টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়নের ১হাজার ৭২টি অস্থায়ী, ৫টি স্থায়ী, ৪২টি অতিরিক্ত ও ১৭টি ভ্রাম্যমান কেন্দ্রসহ মোট ১হাজার ১৩৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সর্বমোট ১লাখ ২৪হাজার ১৮৪জন শিশুকে যারমধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ১৪ হাজার ৩৭৫ জন শিশুকে ১টি করে এক লাখ আইইউ ক্ষমতাসম্পন্ন নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ১ লক্ষ ৯ হাজার ৮০৯ জন শিশুকে ১টি করে ২ লক্ষ আইইউ লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। মোট ৩হাজার ৪৬৮ জন শিক্ষকসহ স্বেচ্ছাসেবক, ৫৮২ জন সরকারী টিকাদান কর্মী এবং ১২৬ জন ১ম সারির ও ৪২ জন ২য় সারির সুপারভাইজারের সমন্বয়ে এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম পরিচালিত হবে। কেন্দ্রগুলো সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কোন কারণবশতঃ নির্ধারিত দিনে শিশুদের এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে না পারলেও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কাছে ক্যাপসুলের সরবরাহ থাকবে। সেখান থেকে দু’চার দিনের মধ্যে খাওয়ানো যাবে।
সভায় আরো জানানো হয়, ভিটামিন এ ক্যাপসুল শিশুর জন্য নিরাপদ। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে প্রদানকৃত ভিটামিন এ ক্যাপসুল কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। কিছু কিছু লক্ষণ (যেমন ঃ বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি) প্রকাশ পেতে পারে যা ১২-১৪ ঘন্টার মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। উপরেল্লোখিত লক্ষণ প্রকাশ পেলে অভিভাবককে আশ্বস্ত করতে হবে যে, এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকর্মী বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
এছাড়াও ক্যাম্পেইন দিবসে জন্মের পরপরই নবজাতককে শালদুধসহ মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করে ৬ মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো, পানি, মধু, চিনি বা মিসরির পানি ইত্যাদি না খাওয়ানো, ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরী সুষম খাবার খাওয়ানো, মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী পরিমাণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ প্রাণিজ খাবার (মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, কলিজা ইত্যাদি) খেতে দেয়া, পরিবারের রান্নায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা প্রভৃতি পুষ্টি বার্তাসমূহ প্রচার করা হবে।