॥আবুল হোসেন॥ মেয়র ও কাউন্সিলরদের মধ্যকার দ্বন্দের জের ধরে এক সপ্তাহ আগে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার হিসাব রক্ষকের কক্ষে কাউন্সিলরদের মারা তালা গতকাল বুধবার খুলে দেওয়া হয়েছে। দুদক থেকে পৌরসভার নানা অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ায় সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তালা খুলে দেওয়া হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মোঃ নিজামের বিরুদ্ধে আনীত পাঁচটি বিষয়ের উপর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত সোমবার দুর্নীতি দমন ফরিদপুরের সমন্বিত কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে একটি পত্র দিয়েছে। কিন্তু হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা থাকায় কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ কাগজপত্র দিতে পারছিল না। গত বছরের শেষ দিকে দুর্নীতি দমন কমিশন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ যায়।
দুদক ফরিদপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক. আবুল বাশার স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, মেয়রের বিরুদ্ধে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, সরকারী অর্থে বিদেশ ভ্রমন ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠ অনুসন্ধানের স্বার্থে রেকর্ডপত্র/কাগজপত্র সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। এমতাবস্থায় মেয়র শেখ মোঃ নিজামের সময় কালীন পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত নথি(মন্ত্রণালয় অনুমোদন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি), সরকারী অর্থে বিদেশ ভ্রমন সংক্রান্ত নথি, ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ, জঙ্গল পরিস্কারের ৭টি নথি, উন্নয়ন খাতের ৩৭লাখ ৫০হাজার টাকা রাজস্ব খাতে হস্তান্তরের কাগজপত্র/রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি জরুরী ভিত্তিতে সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।
পৌরসভার ১০জন কাউন্সিলর গত ৩রা জানুয়ারী হিসাবরক্ষকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। দুদকের চাওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, কয়েকটি ফাইল ও তথ্য সংক্রান্ত নথিপত্র আটকা পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল ১১ই জানুয়ারী দুপুরে সচিব, সহকারী প্রকৌশলী, হিসাব রক্ষকের সামনে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কুদ্দুসুল আলম কক্ষের তালা খুলে দেন। এ সময় কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, কাউন্সিলর ও উপজেলা আ’লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন মৃধা, কাউন্সিলর ও উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন শেখ, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসেল মোল্যা উপস্থিত ছিলেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, মেয়রের নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বাধ্য হয়ে আমরা হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা দিয়ে ছিলাম। দুদক থেকে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তালা খুলে দিয়েছি।
মেয়র শেখ মোঃ নিজাম সাংবাদিকদের বলেন, পাঁচটি বিষয় জানতে দুদক থেকে কাগজপত্র চেয়ে চিঠি এসেছে। একটা প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে পৌরসভার কর্মকান্ডকে ব্যাহত করতে এবং আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে আমি তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ড মেনে নেয়া হবে না।