শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

মিডিয়াকে নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সবকিছু নেতিবাচক লেখার ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশের কল্যাণে যা কিছু তা ইতিবাচক লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একটা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে সরকারের বিরুদ্ধে না লিখলে কোন মিডিয়া টিকে থাকতে পারে না। আমাদেরকে এই অসুস্থ্য মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং কোন রকম ভীতি ও পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সত্য তুলে ধরতে হবে।
আমরা দেশের জন্য কোন কিছু করলে তা যথাযথভাবে প্রকাশ করা উচিত। এটা আমার বা আমার দলের স্বার্থে নয় বরং দেশের স্বার্থে।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল ১৭ই মে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।
তিনি বলেন, প্রতি ১৫দিন পর পর আমরা বিভিন্ন দৈনিক ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়ায় পরিবেশিত সংবাদ সংগ্রহ করছি। এতে দেখা যায় আমাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অধিকাংশ নেতিবাচক সংবাদ এবং ইতিবাচক সংবাদ খুবই দুর্লভ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মিডিয়ার সব সময় ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। দেশকে এগিয়ে নিতে জনকল্যাণ ও জনগণের আস্থা অর্জনে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রত্যেক দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগের নীতিমালা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ৩৭বছরের দায়িত্ব পালনকালে মিডিয়ার কাছ থেকে আমি তেমন সহযোগিতা পাইনি এবং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমাকে প্রতিকূল অবস্থার মাঝে এগিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু এতে আমার মাথা ব্যথা ছিল না। কারণ আমি জানি যে, আমি কি করছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সত্য ও সততার পথে থাকলে অবশ্যই ভাল ফল পাওয়া যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, একশ্রেণীর সংবাদপত্র আছে যারা ২০০১ সালের পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘুদের ওপর বিএনপি-জামাত যে নির্যাতন চালিয়েছিল এবং ভয়ভীতি দেখিয়েছিল তা প্রকাশ করতে চায় না। তবে তিনি সেসব সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ দেন, যারা সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন এবং ওই সময়ে জনগণকে পরিস্থিতি অবহিত করার সাহস যুগিয়েছিলেন।
নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে দুটি সংবাদপত্রের সমালোচনা করেন, যেগুলোকে তিনি হঠকারী সাংবাদিকতার জন্য অপছন্দ করেন এবং গণভবনেও রাখেন না। তিনি বলেন, এই সংবাদপত্র দুটি আমার কাছে মূল্যহীন। আমি জনগণের জন্য কি করছি, আমার কাজের মাধ্যমেই তা দৃশ্যমান হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আশা প্রকাশ করেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের এবং ২০০১ সালে থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অন্যান্য সরকারের শাসনামলের কর্মকান্ড মূল্যায়ন করে জনগণই বুঝতে পারবে তাঁর সরকার এবং অন্যান্য সরকারের মধ্যকার পার্থক্য।
বিএফইউজে-এর সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বিএফইউজে-এর মহাসচিব ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় ফেডারেশনের দশ জেলা ঃ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ময়মনসিংহের সভাপতি আতাউল করিম, কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, বগুড়ার সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু, রাজশাহীর সভাপতি কাজী শাহেদ, নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আব্দুস সালাম, যশোরের সভাপতি সাজেদ হোসেন, কক্সবাজারের সভাপতি আবু তাহের, খুলনার সভাপতি জাহিদ হোসেন ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর নেতৃত্বে দশজন সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। এছাড়া ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি তরুণ তপন চক্রবর্তী ও সম্পাদক আল মামুন সাংবাদিকদের বরাদ্দ দেয়ার জন্য জমির কিছু কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিগত ৯বছরে দেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকার গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নিহত সাংবাদিকদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষুকের জাতি নয়, কারণ তাঁর সরকার সর্বদা তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের উন্নয়নে জোর দিচ্ছে, যার ফলে মাথাপিছু আয় এখন ১হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
তিনি এ সময় জনগণের উন্নয়ন এবং তাদের কল্যাণে যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে তা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে পারে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে থাকবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭২ সালের ১৬ই জুলাই ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রথম বার্ষিক সভায় বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতার স্বতন্ত্র নীতি আছে।
তিনি বলেন, ওই নীতিমালার কথা মনে রেখে যদি আমরা কাজ করি তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বিকেলে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বিএফএইজের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা সংগঠনের উন্নয়নে ভবিষ্যত করণীয় সম্পর্কে তাদের বক্তব্য ও মতামত তুলে ধরেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!