॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আগামী ১লা ও ২রা এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য পরিবার পরিকল্পনা মেলার প্রচারের লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আয়োজনে গতকাল ২৮শে এপ্রিল বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি খান মোঃ জহুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন, জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু, দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও রবিউল ইসলাম মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নেয়ামত উল্লাহ, মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সুমি সাহা, রাজবাড়ী মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ গোপাল চন্দ্র সূত্রধরসহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী তার বক্তব্যে বলেন, এবারই প্রথম সারা দেশের ন্যায় আগামী ১লা ও ২রা এপ্রিল রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে আজাদী ময়দানে পরিবার পরিকল্পনা মেলা অনুষ্ঠিত হবে- যা বর্তমান সরকারের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মানুষকে সচেতন করার একটি বিশেষ উদ্যোগ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এই জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশী হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ধর্মীয় কারণে ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রচার না হওয়ায় তা ফলপ্রসু হয়নি। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ৭০ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুন হয়, সেখানে আমাদের দেশে গত ৪৭ বছরেই তা দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আমরা নি¤œ আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। সুতরাং আমাদের ২০২১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার টার্গেটকে সামনে রেখে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে রাজবাড়ী জেলায় দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের হার বেশী হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা কম। পরিসংখ্যান অধিদপ্তর ও এনজিও ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী রাজবাড়ীর জনসংখ্যার ঘনত্ব, সক্ষম দম্পতির সংখ্যা, পদ্ধতি গ্রহণকারীর হার, জন্মহার, মাতৃমৃত্যুর হার, শিশু মৃত্যুর হার ইত্যাদি বিষয়গুলো জাতীয় পর্যায়ের চেয়ে সন্তোষজনক। এ অবস্থা ধরে রাখার পাশাপাশি আরো উন্নতির লক্ষ্যে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক বাল্য বিয়ে, কোর্টে বিয়ের এফিডেভিট, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। বক্তব্যের শেষে জেলা প্রশাসক ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।