॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউপির শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নাশকতার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করণসহ নাশকতার নেপথ্য উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট গতকাল ৪ঠা জানুয়ারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির ২৪জন তাদের মন্তব্য প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
জানাযায়, বাহাদুরপুর ইউপির শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে নাশকতার ঘটনায় গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর শাকিলের সভাপতিত্বে বিদ্যালয় চত্বরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাহাদুরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম(মহন মুন্সী), বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কাশেম, বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও বাহাদুরপুর ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমান আলী, শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক(হক সাহেব), বাহাদুরপুর ইউপি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শওকত আলী মোল্লা, বাহাদুরপুর ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান, পাংশা উপজেলা শিক্ষা কল্যাণ ট্রাষ্টের নেতৃবৃন্দ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান ও সাবেক কমিটির সদস্যবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বহু লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গত সোমবার ভোররাতে শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নাশকতা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ, সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জাননো হয়।
সভায় উপস্থিত লোকজনের সর্ব সম্মতিক্রমে নাশকতার সাথে জড়িতদের চিহ্নিতকরণসহ নাশকতার নেপথ্য উদঘাটনে বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও বাহাদুরপুর ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমান আলীকে আহবায়ক, বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কাশেম ও সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম(মহন মুন্সী) কে সদস্য করে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে নাশকতার সাথে জড়িতদের চিহ্নিতকরণসহ নাশকতার নেপথ্য উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির সকলের কাছে মন্তব্য প্রতিবেদন আহবান করা হয়। সে আলোকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তদন্ত কমিটির কাছে ২৪জন তাদের মন্তব্য প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত কমিটির আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমান আলী মাষ্টার ২৪জনের মন্তব্য প্রতিবেদন জমা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির সুনাম ও সুখ্যাতি আছে। তদন্ত কমিটি ৫দিনের মধ্যে বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর শাকিলের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত গত ২রা জানুয়ারী ভোররাতে শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে তালা ভেঙ্গে দুর্বৃত্তরা নাশকতা চালায়। দুর্বৃত্তরা অফিস কক্ষে আগুন লাগিয়ে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কাগজপত্র, চেয়ার-টেবিল, আসবাবপত্র, নগদ ৪০হাজার টাকাসহ অফিসের যাবতীয় জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার ভোরে পাংশার দমকল বাহিনীর একটি দল স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নাশকতার ফলে বিদ্যালয়ের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর শাকিল।
এদিকে বিদ্যালয়ে নাশকতার ঘটনায় সর্বমহলে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল গতকাল বুধবার পাংশা থানায় ১২৮নং জিডি করেছেন।