॥আশিকুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামে অটোবাইক যাত্রী তরুণী চিকিৎসক (২৪)কে অটো থেকে নামিয়ে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে গণধর্ষণ করেছেন অটো চালকসহ ৭জন। ওই তরুণীর বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়।
গত ২৩শে ফেব্রুয়ারী রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল ২৪শে ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন ইজিবাইক চালক (অটো চালক)কে র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা গ্রেফতার করেছে।
আটকরা হলো ঃ রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের আরশাদ মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লা(২০), বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের মৃত মুন্নাফ সরদারের ছেলে হান্নান সরদার(৩০) ও মৃত আবুল মোল্লার ছেলে রানা মোল্লা(২৫)। আটকরা তিনজনই র্যাবের কাছে তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন।
গতকাল ২৪শে ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে ৮টায় র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পে বসে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এ সময় ওই তরুণী বলেন, আমি ঢাকায় চাকুরী করি। ফরিদপুরের মুন্সিবাজারে চাচার বাড়ীতে যাওয়ার জন্য গত শুক্রবার বিকেলে তিনটার দিকে গাবতলী থেকে ফরিদপুরের বাসে উঠি। পাটুরিয়া ঘাটে এসে যানজট দেখে লঞ্চে পদ্মা নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসি। সেখান থেকে মাহেন্দ্র গাড়িতে করে রাত সাড়ে ৭টার দিকে গোয়ালন্দ মোড়ে এসে ফরিদপুরের গাড়ি খুঁজতে থাকলে এক ইজিবাইক চালক(অটো গাড়ীর চালক) এসে বলেন তার ইজি বাইকে শিবরামপুর গেলে ফরিদপুরের গাড়ি পাবেন। এ সময় আমি তার অটোরিকশায় উঠি। তখন অটো চালকের পাশে আরো একটি ছেলে বসা ছিলো। বেশকিছু দূর যাওয়ার পর আরো একটি ছেলে অটোতে উঠে। এরপর একটি নির্জন জায়গায় অটোটি দাঁড় করিয়ে চালকসহ ৩জন আমার মোবাইলসহ ব্যাগপত্র কেড়ে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে চিৎকার করলে তারা রাস্তার ঢালে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে আরো চারজন এসে ধর্ষণ করে। এভাবে মোট ৭জন পালাক্রমে ধর্ষণ করে রাস্তার পাশে এনে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি সেখান থেকে পালিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেই। এরপর ওই বাড়ির মালিক স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশকে খবর দেন। পরে গতকাল শনিবার সকালে এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ৩জনকে আটক করে র্যাব।
র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের দুই নম্বর কোম্পানির অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিন বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে ওই তরুণীকে র্যাব ক্যাম্পে এনে তার সামনে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় আটকরা ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা নয়, তারাসহ কয়েকজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেন।
তিনি আরও জানান, ওই তরুণী বাদী হয়ে আটকদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এরপর আটকদের থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।