বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৫:৪২ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীতে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও মানহানীর তিনটি মামলা

  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কটুক্তি ও অপমানজনক বক্তব্য প্রদান করায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও মানহানীর অভিযোগে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল ১৯শে ডিসেম্বর রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ ও ২নং আমলী আদালতে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, জেলা পরিষদের সদস্য ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজানুর রহমান মজনু এবং গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল বাদী হয়ে দন্ড বিধির ১২৩(ক)/১২৪(ক)/৫০১/৫০২/৫০৫ ধারায় মামলা ৩টি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ৩টি মামলার বিষয়েই সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
৩টি মামলারই অভিন্ন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ০১/১২/২০১৭ইং তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রোটিক কাউন্সিল(বিডিসি) কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর নাতনী ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মানহানীকর উক্তি ও অপমানজনক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে একজন কলংকিত ব্যক্তি, টিউলিপ সিদ্দিকীকে সাংবাদিকরা গুম সংক্রান্তে প্রশ্ন করলে নিখোঁজ হয়ে যাবে এবং তাচ্ছিল্যভরে বঙ্গবন্ধু ও টিউলিপ সিদ্দিকীর ‘জিন’ এর বিষয়ে কটুক্তি করেন। তার এই অপমানজনক বক্তব্য ও কটুক্তির কারণে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকীসহ মামলার বাদীদের সম্মানহানী ঘটেছে। এ ধরনের বক্তব্য দেশ, জাতি ও ইতিহাসকে হেয় করার শামিল। তার এই বক্তব্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং ফেসবুক ও অনলাইন মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। এতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে উক্ত মানহানীকর বক্তব্য ও কটুক্তি করাসহ বাংলাদেশকে ভারতের কলোনী ও স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তার ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিতভাবে উল্লেখিত মিথ্যা ও মানহানীকর উক্তির ফলে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী মর্মাহত ও ব্যথিত হয়েছেন।
মাহমুদুর রহমানের উক্তরুপ বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও সম্মানহানীকর এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এতে মামলার বাদী ও তাদের দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়েছে। উক্ত বক্তব্যের কারণে দলীয় ও ব্যক্তিগতভাবে আহত, মর্মাহত ও সংক্ষুদ্ধ হয়ে তারা ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন। ৩টি মামলার বাদীই মাহমুদুর রহমানের উক্ত বক্তব্য গত ১৮ই ডিসেম্বর রাতে নিজেদের বাড়ীতে বসে ইউটিউবের মাধ্যমে শুনেছেন এবং দেখেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে হাফিজুর রহমান হাফিজ ১৮ই ডিসেম্বর রাত ১০টায়, মিজানুর রহমান মজনু রাত সাড়ে ১০টায় ও নুরুল ইসলাম মন্ডল সাড়ে ৮টায় বক্তব্যটি শুনেছেন এবং দেখেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়াও মামলায় হাফিজুর রহমান হাফিজ ও মিজানুর রহমান মজনু তাদের ও দলের ১০০ কোটি টাকা করে এবং নুরুল ইসলাম মন্ডল তার ও দলের হাজার কোটি টাকার সম্মানহানী হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে হাফিজুর রহমান হাফিজের মিসপি-৪৬৬/২০১৭নং মামলায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, রাজবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শরীফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আনিছুর রহমান আনিছ ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজীবকে সাক্ষী করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক আগামী ১৮/০২/২০১৭ইং তারিখে মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেছেন।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে জেলা পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান মজনুর মিসপি-৩৫০/২০১৭নং মামলায় কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম মৃধা, কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান নবাব, মদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর শাকিল ও পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মারুফকে সাক্ষী করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক আগামী ১২/০২/২০১৭ইং তারিখে মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেছেন।
একই আদালতে গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডলের মিস.পি-৩৫১/২০১৭নং মামলায় গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন রনি এবং দৌলতদিয়া বেপারীপাড়ার মৃত ছামাদ ব্যাপারীর ছেলে হাবিব রেজা টুটুলকে সাক্ষী করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক একই দিনে অর্থাৎ আগামী ১২/০২/২০১৭ ইং তারিখে মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১লা ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রোটিক কাউন্সিল (বিডিসি) কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমানের উক্ত বক্তব্য প্রদানের ঘটনায় ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!