॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল গতকাল ১২ই ডিসেম্বর সকালে বর্নাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর নেতৃত্বে বর্র্নাঢ্য র্যালী কালেক্টরেটের আ¤্রকানন চত্বর থেকে বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
এরপর সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস প্রমুখ।
এ সময় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মোক্তার আলী মল্লিকসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণসহ সংশ্লিষ্টরা র্যালী ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন তারই অংশ হিসেবে আজ ১২ই ডিসেম্বর সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতে প্রথম বারের মতো জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস পালন করা হচ্ছে। এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে আজ দেশের সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ও স্বচ্ছতা এসেছে। যখন বর্তমান সরকার দেশের সবকিছুতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে বলে ঘোষণা করেছিল তখন অনেকে বিশ্বাস করতে না পেরে বিষয়টি নিয়ে উপহাস করেছিল। কিন্তু এখন বাস্তবতা হলো সরকার তার সকল দপ্তরে এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। শুধু সেটাই নয়, আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমকে অনেক সহজ করেছে। প্রতিটি ইউনিয়নে এখন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যাতে করে আজ প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন ঘরে বসে তাদের পাসপোর্টসহ বিভিন্ন সরকারী সুবিধা ভোগ করতে পারছে। আমাদের দেশ কৃষি নির্ভর। কৃষি ও গার্মেন্টস পন্য রপ্তানী এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের বৈদেশীক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত। কিন্তু ভবিষ্যতেও এসব পন্য রপ্তানীর মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়াতে পারবো এটা চিন্তা করা ঠিক হবে না। আমাদের নতুন নতুন খাত খুঁজতে হবে। তারই অংশ হিসেবে সরকার তথ্য প্রযুক্তি খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য ভালো খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে। বর্তমানে আমরা আমাদের যুব সমাজকে তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে কাজ করে যাচ্ছি। যার মাধ্যমে অচিরেই আমার এই খাত থেকে বিলিয়ন ডলার আয়ের কথা ভাবছি। যদি সবকিছুতে ঠিকমতো ডিজিটাল প্রযুক্তির বাস্তবায়ন করা যায় তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবো বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভার শেষে জেলার যেসব সরকারী বিভাগ শতভাগ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে তাদের কর্মসম্পাদন করে জেলার উন্নয়নে অবদান রাখছে তাদের মধ্যে থেকে সদর উপজেলা ভূমি অফিস, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং জেলা প্রশাসনের শিক্ষা ও আইসিটি বিভাগকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পুরস্কার স্বরূপ ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে সন্ধ্যায় রাজবাড়ী রেলগেটস্থ শহীদ স্মৃতি চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয় বলে তথ্য অফিস সুত্রে জানা যায়।