॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন দুপুরে রাজবাড়ী সরকারী শিশু পরিবারের(বালিকা) এতিম শিশুদেরকে উন্নতমানের খাবার হিসেবে বিগত দিনে পোলাও-মাংস দেয়া হলেও এবার দেয়া হয়েছে নিম্নমানের চালের সাধারণ খিচুরী ও ইলিশ মাছ। এরফলে উন্নতমানের খাবার থেকে বঞ্চিত হলো শিশু পরিবারে বসবাস করা শতাধিক এতিম শিশু।
তবে শিশু পরিবারের দায়িত্বে থাকা উপ-তত্তাবধায়ক ফাতেমা কামরুন্নাহার আঁখির দাবী, অধিদপ্তর থেকে বিশেষ দিনগুলোতে উন্নতমানের খাবারের মেন্যু নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এবারের ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। তাই শিশুদের পছন্দ মতই খিচুরী-ইলিশ রান্না করা হয়েছে।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস জানালেন, ইলিশ-খিচুরীও উন্নতমানের খাবার। শিশু পরিবারে সাংবাদিক যাওযার পর সুপারের ফোন পেয়ে রাতের খাবারের সাথে কোক সংযুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ২রা ডিসেম্বর দুপুর ১টায় রাজবাড়ী সরকারী শিশু পরিবারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১২টার মধ্যেই দুপুরের খাবার বন্টন করে দেয়া হয়েছে। এ সময় কয়েকজন শিশুর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, ১পিচ করে ইলিশ ও খিচুরী তাদেরকে খেতে দেওয়া হয়েছে।
সরকারী শিশু পরিবারে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে শিশু পরিবারের দায়িত্বে থাকা উপ-তত্ত্বাবধায়ক ফাতেমা কামরুন্নাহার আঁখি ছুটে আসেন। পরে নিজ অফিস কক্ষে বসে তিনি জানান, ‘আজকে আমাদের মেন্যুতে মাছ ছিলো। বুঝতে পারছি আমরা কেন দুপুরে দেইনি এটা নিয়ে সমস্যা তো? বাচ্চাদের চয়েজ হিসেবে দেয়া হয়েছে। উন্নতমানের মেন্যুতে দুপুরে ও রাতে দুই বেলাতেই খাবার দিতে হয়। ইলিশ মাছ তো দামী। আপনারা মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারেন। যদি অধিদপ্তর থেকে মেন্যু না করা থাকে তাহলে সাধারণত বাচ্চাদের পছন্দ মতো খাবার দেয়া হয়। এবার ঈদে মিলাদুন্নবীর মেন্যু ঠিক করে না দেয়ায় বাচ্চাদের পছন্দ মতো দিয়েছি। কি কি খাবার দেয়া হয়েছে তা অধিদপ্তরে সব সময় পোস্ট করে দেয়া হয়। আমাদের যদি অধিদপ্তর থেকে মেন্যু ঠিক করে দিতো তাহলে কোন সমস্যা ছিলো না। রাতে মাংস দিবো। সাধারণত ঈদে মিলাদুন্নবীতে যেমনটা করা হয়ে থাকে আমরা তেমনটাই করেছি। তিনি আরও জানান, শিশুদের সকালে লুডুলস ও লাড্ডু দেয়া হয়েছে। বিকালে মিলাদে আবার লাড্ডু দেয়া হবে।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস জানান, বছরে ১২ থেকে ১৩টি দিবস থাকে যেদিন আমাদের উন্নতমানের খাবার দিতে হয়। কিন্তু এর জন্য কোন অতিরিক্ত বরাদ্দ থাকে না। সে জন্য ওদের রেগুলার বরাদ্দ থেকে টাকা সেভ করতে হয়। আজ মেনুতে দুপুরে ইলিশ-খিচুরী ও রাতে খাসির মাংস-কোক করা হয়েছে। সকালে নুডুল্স ও মিষ্টান্ন। ইলিশ মাছ দামী মাছ। বাচ্চাদের ডিমান্ডের দিকে তাকাতে হয়। কয়েকটি দিবসে মেন্যু সেট করে দেয়া হয়, বাকিটা লোকাল এডমিনিস্ট্রেশনের ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, পোলাও-গোশত খাওয়ানোটা হয়তো যাবে, পাশাপাশি সারা বৎসরের দিকেও চিন্তা করতে হবে। ওদের টাকা থেকেই এই টাকার সংকুলান করা হয়। দুইটি দামী আইটেম রয়েছে। এটাই টেন্ডারের সবচেয়ে দামী আইটেম। আমি এসব জানার পর বললাম যে আপনারা কোক রাখেন। কোক অ্যাড করে দিলাম। তবে এটাও ভাবতে হবে, আজ একবেলা ভালো খাওয়ার জন্য আবার ৭দিন কষ্ট করতে না হয়। এটাও কিন্তু আমাদের বিবেচনায় নিতে হয়।