॥ইউসুফ মিয়া॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল ২১শে আগস্ট সকালে পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ৮৭১টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নুরমহল আশরাফী ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল বাশার মিয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কাজী আলমগীর হোসেন।
এ সময় সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মনোয়ার মাহমুদ এবং পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলামসহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, বর্তমান সরকার শুধু বন্যার্তদের পাঁশেই দাঁড়ায় নাই, অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছে। পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন বন্যা কবলিত না হলেও অতিবৃষ্টিতে এ ইউনিয়নের অনেক কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার সেই বিবেচনা করে আপনাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এখন আর বাংলাদেশের ৬টি ঋতু বোঝা যায় না। শুধু গ্রীষ্ম, বর্ষা আর শীত এই ৩টি ঋতু বোঝা যায়। তিনি শোকের মাস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বলেন এই মাসেই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় এবং আমার বাবাকেও এই আগস্ট মাসেই হত্যা করা হয়। এছাড়াও তিনি মাদক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে আরো তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, দেশব্যাপী বন্যা পরিস্থিতি সরকার প্রধান দেখভাল করছেন। সরকার দুর্গত জনগণের পাশে আছে। প্রতিদিন ১২টার মধ্যে বন্যার সার্বিক খোঁজ-খবর প্রধানমন্ত্রী বরাবর জানানো হচ্ছে। সেখানের নির্দেশ রয়েছে যতদিন আপনাদের ঘরে ফসল না উঠবে ততদিন এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি তালিকা প্রস্তুত করছি, সেই তালিকা অনুযায়ী কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হবে। কোন মানুষ না খেয়ে মারা যাবে না, এই নিশ্চয়তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এসেছে যা বাস্তবায়নের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর প্রশংসা করে বলেন, আপনারা একজন ভাল জনপ্রতিনিধি পেয়েছেন। তিনি সবসময় আপনাদের পাশে থাকেন। সাধারণ মানুষের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেন এবং সহযোগিতা করেন।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক বলেন, বর্তমান সরকার বন্যার্তদের পাশে যে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেটা সাফল্যের দাবীদার। জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় কোন অনিয়ম ছাড়াই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে, যেটা সরকারের মুখ উজ্জল করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নুরমহল আশরাফী বলেন, বর্তমান সরকার অসহায় মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় অসহায় মানুষগুলো যতদিন পুর্নবাসিত না হবে ততদিন সরকারী সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বক্তব্যের শেষে অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ৮৭১টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়। চাউল পেয়ে খুশি হয়ে পাঁচুরিয়া গ্রামের কৃষক আরশাফ শেখ বলেন, বৃষ্টির ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারলে আগামীতে পরিবার-পরিজন নিয়ে হয়ত বেঁচে থাকতে পারবো। সরকার যদি আমাদের কৃষি ক্ষেত্রে সাহায্য-সহযোগিতা করে তাহলে আমরা আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবো।