॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার পাইককান্দি চরকান্দি গ্রামে সমবায় সমিতির মাধ্যমে লীজ নিয়ে মাছ চাষকৃত সরকারী জলমহালে গত ৩রা আগস্ট রাতে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত সমবায় সমিতির সদস্যদের দাবী, এতে প্রায় ১৫লক্ষ টাকা মূল্যের ২শত মণ মাছ মরে গেছে। ‘সুফলভোগী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ’ এর নামে ৪৫ একরের এই সরকারী জলমহাল ৩বছরের জন্য লীজ নিয়ে ২০ জন মৎস্যচাষী সেখানে মাছ চাষ করেছিলেন। এখন তারা এনজিও’র ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সমিতির সহ-সভাপতি গজেন্দ্র নাথ সরকার জানান, তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিলাম ডাকের মাধ্যমে জলমহালটি লীজ নিয়ে মৎস্য চাষ করা শুরু করেন। তাদের মৎস্য চাষে ঈর্ষান্বিত হয়ে শত্র“তাবশতঃ কেউ বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ২শত মণ মাছ নিধন করেছে। এতে তাদের ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে তারা মৎস্য চাষ শুরু করেছিলেন। এ ঘটনায় সমিতির সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সরকারীভাবে সহযোগিতা পেলে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
সমিতির সভাপতি রাজ কুমার বিশ্বাস জানান, জলমহালে সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, রুই, মিরর কার্প, আমেরিকান, ব্লাক কাপ, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২শ মণ মাছ ছিলো। শত্র“তার জেরে বিষ দিয়ে সব মাছ মেরে ফেলা হয়েছে। সমবায়ের সদস্যরা সবাই দরিদ্র মানুষ। ধার-দেনা করে মাছ চাষে নেমেছিলো। এখন সবাই অসহায় হয়ে গেল।
সমবায়ের সদস্য প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, মানুষের সাথে মানুষের কোন্দল থাকতে পারে। তাই বলে মাছের সাথে এমন শত্র“তা করা ঠিক হয়নি। আমাদের সমবায়ের কষ্টের ফসল এই জলমহালের মাছগুলো চোখের সামনে মারা গেল। খুব কষ্ট লাগছে। এখন শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নাই। সব মাছ মরে পচে যাচ্ছে। লাভের আশা দূরে থাক, মূলধনই হারিয়ে গেল।
বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সঠিক কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। তবে জলমহলে পাটের জাগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ.এম রকিব হায়দার জানান, জলমহালের মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি অমানবিক। ঘটনার সঠিক কারণ জানতে তদন্ত করে দেখা হবে।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হাসিনা বেগম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।