॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘ভারতের উপহার ২০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছেছে আর সরকারের সাফল্যে এখন বিএনপি’র মুখে উদভ্রান্তের প্রলাপ’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুুদ।
গতকাল ২১শে জানুয়ারী সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ মুরাদ হাসান ও প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকারের উপস্থিতিতে সম্পাদক ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোহবান চৌধুরী ও আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন এ সময় ফোরামের বক্তব্য তুলে ধরেন।
বিএনপি’র সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি করছে’ এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনার টিকা চলে এসেছে এবং এটি উপহার হিসেবে ভারত সরকার আমাদেরকে দিয়েছে। এজন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আর এসময় বিএনপির বক্তব্য তাদের যে মানসিকতা তুলে ধরে, তা হলো-অপছন্দের প্রতিবেশীর কোনো ভালোই দেখতে না পারা এবং সবসময় অমঙ্গল কামনা করা।’
‘বিএনপি আশা করেছিল, দেশ এই করোনা মহামারি সামাল দিতে পারবে না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেটি সামাল দিয়েছেন এবং বিশ্বব্যাপী তার এই নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, উপমহাদেশে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা সবার ওপরে, সমগ্র পৃথিবীতে ২০তম। করোনা মহামারির মধ্যে সারা বিশ্বে মাত্র ২২টি দেশে ধ্বনাত্মক জিডিপি গ্রোথ হয়েছে, তন্মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।
‘বিএনপি নিজেরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সবকিছুতেই লুটপাটের সাথে যুক্ত ছিল এবং হাওয়া ভবন গঠন করে যে লুটপাট করেছিল এজন্য দুর্নীতিতে পরপর চারবার একক চ্যাম্পিয়ন আর একবার আরেকটি দেশের সাথে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন’ বলেন তিনি।
করোনার টিকা যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রী আনতে পেরেছেন এবং একইসাথে এটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে যারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার তাদেরকে প্রথমে দেয়া হবে, সেভাবেই সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, জানান ড. হাছান। ‘বিএনপি এখানে লুটপাট কেন দেখতে পাচ্ছে, সেটি আমি জানি না, যারা সবসময় লুটপাটের কথা চিন্তা করে তারা হয়তো এভাবে চিন্তা করতে ও বলতে পারে’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘মূল কথা হচ্ছে সরকারের এই সাফল্যে তারা উদভ্রান্ত হয়ে গেছে। এই জন্য তাদের মুখে উদভ্রান্তের মতো প্রলাপ।’
সম্পাদক ফোরাম এ সময় ই-টেন্ডারিং এর পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞাপনসহ সকল সরকারী বিজ্ঞাপন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দু’টি এবং জাতীয় পর্যায়ে ৬টি বাংলা ও ২টি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশের ব্যবস্থা, নামসর্বস্ব ও অনিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ ও তাদের মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিলের দাবি জানায়।
ডিএফপি’র তালিকানুসারে ক্রোড়পত্র প্রদান ও যেসব জাতীয় দৈনিক ঢাকার দুই সংবাদপত্র হকার্স সমিতিতে বিতরণ ও বিক্রির জন্য দেয়া হয়, সেগুলো ছাড়া অন্য পত্রিকায় সরকারের বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ করারও দাবি জানায় তারা।
সেই সাথে সংবাদপত্রের প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ ব্যবস্থা সংশোধন ও একটি কমিটির তদারকির মাধ্যমে করা, সরকারী বিজ্ঞাপনের বিল তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের ব্যবস্থা, দীর্ঘ বকেয়া বিল পরিশোধের উদ্যোগ, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে সম্পাদক ফোরামের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উত্থাপন করেন তারা। সম্পাদকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক ও ১৫ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতার সনদ যাচাই করে পত্রিকার ডিক্লারেশন দেয়া ও পত্রিকার সম্পাদক বা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে পূর্ণকালীন সাংবাদিক থাকা ও পত্রিকার প্রকৃত সার্কুলেশন যাচাই করে মিডিয়া তালিকাভুক্ত করার দাবি তুলে ধরে ফোরাম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত সনদ ছাড়াও অনেক স্বশিক্ষিত প্রতিভাবান সাংবাদিক দেশে রয়েছেন, যাদের সম্পাদক হবার যোগ্যতাও রয়েছে, যা বিবেচনাযোগ্য। অন্যান্য দাবিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম সদস্যদের মধ্যে ফারুক আহমেদ তালুকদার, রিমন মাহফুজ, দুলাল আহমদ চৌধুরী, মফিজুর রহমান খান বাবু, কাজী নাছির উদ্দিন বাবুল, মীর মনিরুজ্জামান, এস এম মাহবুবুর রহমান, নাজমুল আলম তৌফিক, মাহমুদ আনোয়ার হোসেন, মোঃ আশ্রাফ আলী, নাসিমা খান মন্টি, আহসান উল্লাহ, কে এম বেলায়েত হোসেন, ড. এনায়েত কাসিম, শরিফ শাহাবুদ্দিন এবং আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া সভায় অংশ নেন।