॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ীতে আটকেপড়া বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের দেড় শতাধিক জুট মিল শ্রমিক ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
গতকাল ১লা এপ্রিল দুপুরে তারা রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের আলাদীপুরে ‘রাজবাড়ী জুট মিল’-এর সামনের বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর রাজবাড়ী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানায়, গত সোমবার থেকে মিল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তার আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়াদী পরিশোধ পূর্বক এলাকায় ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তা না করে কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছে। এখন তাদেরকে জনপ্রতি ৫শত করে টাকা দিয়ে এখানেই থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু এই দুঃসময়ে তারা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চান।
মিলের ম্যানেজার হারুন অর রশিদ বলেন, গত ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার সরকারী নির্দেশনা থাকলেও রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য তা বাধ্যতামূলক ছিল না। যেহেতু তাদের মিলটি শতভাগ রপ্তানীমুখী পাট পণ্য উৎপাদন করে এবং তাদের আগামী ৩ মাসের অগ্রিম ক্রয়াদেশ থাকায় তারা মিল চালু রেখেছিলেন। পরবর্তীতে সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও জুট স্পিনার্স মিলস এসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০শে মার্চ থেকে মিল বন্ধ করে দেয়া হয়। উত্তরাঞ্চলের শ্রমিকদের নিজস্ব উদ্যোগে বাড়ীতে পাঠানোর কথা থাকলেও করোনা সংকটের কারণে যানবাহন না পাওয়ায় তাদেরকে থেকে যেতে বলা হয় এবং খাওয়ার খরচ বাবদ ৫শত টাকা করে দিতে চাওয়া হয়। কিন্তু তারা এতে রাজী না হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত জটিলতা নিরসনের চেষ্টা করা হবে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ দিদার হোসেন বলেন, মিলে উত্তরাঞ্চলের আরও শ্রমিক ছিল। ইতিমধ্যে তারা তাদের মতো করে চলে গেছে। যারা যেতে পারেনি আমরা আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে তাদেরকে পাঠানোর চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। কিন্তু তিনিও করোনা সংকটের কারণে যানবাহনের ব্যবস্থা করতে রাজী হননি। তবু আমরা ওইসব শ্রমিকদের যাতে খাওয়া দাওয়ার কষ্ট না হয় সে জন্য তাদেরকে ৫শত টাকা করে দিতে চেয়েছি। এছাড়া তাদের কোন পাওনা বকেয়া নেই। তাদের জন্য এতকিছু করা সত্ত্বেও তারা বিক্ষোভ করছে, এটা দুঃখজনক।
রাজবাড়ী থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। মিল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে।