॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কশবামাজইল ইউনিয়নের সূবর্নখোলা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্কুল শিক্ষক আসাদুল বারী খান(৪৫) হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৫জন আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নিহত স্কুল শিক্ষক আসাদুল বারী খানের ভাতিজা মোঃ নজরুল ইসলাম খান বাদী হয়ে পাংশা মডেল থানায় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ জজ আলী বিশ্বাসকে প্রধান আসামী করে ৫১জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ২নং আসামী করা হয়েছে কসবামাজাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দারকে। পাংশা থানার মামলা নং-২০, তাং-১৩/৩/২০২০ইং।
সংঘর্ষে নিহত আসাদুল বারী খান কশবামাজাইল ইউপির চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানের আত্মীয়(মামা) বলে জানা গেছে। তার বাড়ী একই ইউপির সুবর্ণকোলা মাঠপাড়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত খোরশেদ আলী খান। আসাদুল বারী খান ব্র্যাকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং খোকসা এলাকায় প্রাইভেট টিউশনি করতো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ কাওছার হামিদ জানান, পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলার এজহার নামীয় ৫জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো ঃ আতিয়ার হোসেন বিশ্বাস(৩৫) পিতা-আমজাদ বিশ্বাস, রুবেল আলী মন্ডল(৪২) পিতা-লোকমান হোসেন, সিরাজ বিশ্বাস(৩৮) পিতা-রুস্তম বিশ্বাস, শাকিল খান(৩২) পিতা-ফিরোজ খান, সর্ব সাং-সুবর্নখোলা, রতন আলী শেখ(২৬) পিতা-সামাদ আলী শেখ, সাং-জালসুখা, থানা-শৈলকূপা, জেলা-ঝিনাইদাহ গ্রেফতারকৃতদেরকে গতকাল শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কশবামাজাইল ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার এবং বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা জজ আলী বিশ্বাস ও ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানের লোকজনের মধ্যে গত ১৩ই মার্চ ভোরে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাচালে জর্জ আলী বিশ্বাসের গ্রুপের হাতে নিহত হন আসাদুল বারী খান। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ আহত হয়েছে এবং একই সাথে ৩০টি বাড়ী ঘর ভাংচুর করা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিলের দখল নিয়ে মূলতো দুই পক্ষের মদ্যে আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়। সেখান থেকে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিলো। গত শুক্রবার ভোরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে একা পেয়ে আসাদুর বারী খানকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি হিন্দু বাড়ীতে হত্যা করে লাশ গুম করা চেষ্টা করা হয়।
পুলিশের ওই সূত্রটি আরো জানায়, ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে সংঘর্ষ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান,পিপিএম-বার জানান, কসবামাজাইল এলাকা শান্ত রাখতে ৩টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। মামলার বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ গুরুত্বের সাথে ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত চার্জশীট প্রদান করবে।