॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যতিত অন্য কোন সামগ্রী রাস্তার উপর বা পার্শ্বে না রাখার নির্দেশনাসহ মহাসড়কে যান চলাচল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে হাইকোর্ট সম্প্রতি ২৫দফা নির্দেশনা প্রদান করেছে।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মহাসড়কে বা তার স্লোপে বা কোন অংশে অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে নির্মিত হাটবাজার বা দোকান উচ্ছেদ করার নির্দেশনার পাশাপাশি সড়ক বা মহাসড়কে বাঁক পরিহার করে যথাসম্ভব সোজাভাবে নির্মাণ বা সংস্কার করারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সড়কে বাঁক থাকলে সামনে এ সংক্রান্ত সংকেত লিখিতভাবে থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো রয়েছে, যানবাহন চলাচল ছাড়া মহাসড়কে জনসভা বা অন্য কোনভাবে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেয়া যাবে না। রাস্তার পার্শ্বে পরিকল্পনামাফিক বাস স্টপেজ স্থাপন করতে হবে। সড়ক-মহাসড়ক ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। পর্যায়ক্রমে গবাদিপশু পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত খোলা ট্রাক ও লরি ছাড়া সকল প্রকার খোলা ট্রাক ও লরি চলাচল বন্ধ করতে হবে। মহাসড়কে গতিরোধক কমিয়ে আনতে হবে এবং গতিরোধকেও নিয়মিতভাবে উপযুক্ত রং ব্যবহার করতে হবে। যানজট কমানোর জন্য মহাসড়কে স্থান নির্ধারন করে ফ্লাইওভার, ওভারব্রীজ, ওভারপাস ও লেবেল ক্রসিং তৈরি করতে হবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী দুর্ঘটনার পর দ্রুত যানবাহন অপসারনের জন্য হাইওয়ে পুলিশকে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আরো কার্যক্রম চালাতে হবে। মহাসড়কে পথচারী পারাপারের জন্য উপযুক্ত ক্রসিং নির্ধারণ করে আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণ হবে। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার বন্ধে উঁচু লোহার রেলিং দিতে হবে। মহাসড়কে রোড ডিভাইডার দিতে হবে এবং দুর্ঘটনা-প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে গতিসীমা সীমিত রাখার জন্য রাস্তার পার্শ্বে সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। মহাসড়কের উপর চাপ কমানোর জন্য রেলপথ ও নৌপথের সুবিধা বাড়াতে হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাড়ির মূল কাঠামোর কোন পরিবর্তন করা যাবে না। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওজন মাপার যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। সড়ক-মহাসড়কে রাস্তার পার্শ্বে পর্যাপ্ত স্লোপ ও ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। চালকের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া, ইলেকট্রনিক ও পয়েন্ট বেজড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করতে এবং তার ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য বলেছে হাইকোর্ট। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি দুর্ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। মটরযান মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যক্রম মনিটরিং এর আওতায় আনতে হবে। স্কুলের পাঠ্যক্রমে ট্রাফিক রুল অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। যানজট ও দুর্ঘটনা হ্রাসের গাইড লাইন প্রস্তুত কমিটির সুপারিশ জাতীয় সংসদের গোচরে আনা যাতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় আইন প্রনয়ণ করা যায়। নির্দেশনায় মহাসড়ক (নিরাপত্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল) নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২১ এর ৮(১) এর ধারা থেকে অধিদপ্তরের লিখিত অনুরোধ ব্যতিত শব্দটি বাদ দিতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশনা পাওয়ামাত্রই বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের বলেছে হাইকোর্ট।