বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৩ই অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির উপদেষ্টা রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) মোঃ সালাহউদ্দিন, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মুশফিকুর রহমান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে সফুরা ফেরদৌস, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ শরীফুল ইসলাম, জেলা জাসদের(ইনু) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ নিজাম মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান সরকার, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ এবং বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির উপদেষ্টা রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের মধ্যে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন তার থেকে দেশবাসীর দৃষ্টি অন্য দিকে সরাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ড মূলত আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী সুবিধাভোগী জামাত-শিবির ও বিএনপির একটি চক্র ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন তাতে অসৎ উপায়ে ক্যাসিনোর মতো জুয়া ব্যবসাসহ বিভিন্ন অসৎ পন্থায় স্বল্প সময়ে যারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে, বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে তারাসহ একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য আবরারকে হত্যা করা হয়। যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদের পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়, তাদের পরিবার বিএনপি-না হয় জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত। অথচ সেই আবরারকে তারা শিবির বানাতে চেয়েছিল। যেই আবরার আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। যারা এই হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই বিষয়টি নিয়েও অনেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে। অথচ যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে তারা নিজেরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা এ রকম অসংখ্য হত্যাকান্ড প্রকাশ্যে ঘটিয়েছে কিন্তু তার কোন বিচার হয় নাই। বর্তমান সরকার আবরার হত্যাকান্ডের ব্যাপারে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সে জন্য তাদের সরকারকে প্রশংসা করা উচিত।
তিনি বলেন, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের চলমান উন্নয়ন কাজের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে খুশির খবর হচ্ছে এই মহাসড়কের রাজবাড়ী অংশে ২৭টি নতুন কালভার্ট ও ফোরলেন অংশে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেলেই ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য মূল্য কেন বৃদ্ধি পেল সেটি নিয়ে অস্থির হয়ে যাই, অথচ আমরা কখনো কৃষকদের কথা ভাবি না। কৃষকরা অধিকাংশ সময়ই পেঁয়াজের সঠিক মূল্য না পেয়ে লোকসানের শিকার হয়, নানা কারণে তাদের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের উচিত পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেলে আমরা যেমন ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে ব্যস্ত হয়ে পড়ি তেমনিভাবে কৃষকরা যখন পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পায় না তখন তারা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বর্তমানে ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইলিশ মাছ শিকারের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে চুরি করে ইলিশ শিকারের মহোৎসব লাগে। যারা অবৈধভাবে মাছ শিকার করে তাদের বিরুদ্ধে যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় তখন আর তাদেরকে পাওয়া যায় না, কারণ অভিযানের খবর তারা আগেই পেয়ে যায়। আমি শুনেছি যারা নদীতে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ শিকার করে তাদের সাথে অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্ট মৎস্য বিভাগের অনেকের যোগসাজস আছে। তারাই টাকা খেয়ে অভিযানের খবর ফাঁস করে দেয়। আমার মতে যারা সরকারের এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করবে তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদানসহ মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত নৌকা ও জাল ধরার পর পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে আর কেউ নদীতে নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরবে না।
এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম আরো বলেন, অনেকেই রাজবাড়ী থানা সংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করে সরকারী কর্মকর্তাদের আবাসন ও পৌরসভার মার্কেট নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কোন জলাশয় ভরাট করে কোন আবাসন বা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। বিষয়টি সকলেরই জানা এবং এ বিষয়ে আইনও রয়েছে। সুতরাং কোন জলাশয় ভরাট করে আবাসন বা কোন স্থাপনা নির্মাণের আগে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ, অন্য জেলা থেকে এসে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, অতিরিক্ত বালু বহনকারী ট্রাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণকারী চক্র ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করেন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে সকলকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে আমরা এবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।
এ জন্য সকল সরকারী বিভাগসহ জেলাবাসীকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য নদীতে যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাজবাড়ী রেলগেট এলাকায় যে যানজট হয় সেটি সমাধানের জন্য কাজ করা হবে। রেল পুলিশের বক্তব্য মতে, ট্রেনে বা রেললাইনের আশপাশে কোন মাদকসেবী পাওয়া যায় না বলে অভিযান পরিচালনা করেও কোন মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। বিষয়টি কতটুকু সঠিক সেটি চিন্তা করে তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যেহেতু পুকুর ভরাট করে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না সেহেতু রাজবাড়ী থানার পাশের পুকুরটি ভরাটের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে রাজবাড়ী রেল স্টেশনের সামনের লেকের সৌন্দর্য বর্ধন, নদীতে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন কাজের বর্তমান অবস্থা, মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানসহ জেলার আইন-শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!