॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে “তথ্যই অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার ঃ তথ্যই শক্তি দুর্নীতি থেকে মুক্তি” প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাকের সহযোগিতায় গতকাল ২৯শে সেপ্টেম্বর সকালে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় কালেক্টরেটের আ¤্রকানন চত্ত্বর থেকে র্যালীটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালী শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, রাজবাড়ী সনাকের সভাপতি প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর উপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন জেলা তথ্য অফিসার তাহমিনা আক্তার। এ সময় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, সনাকের সদস্যগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, সারা বিশ্বের সাধারণ মানুষের তথ্য জানার অধিকার আছে-বিষয়টি বিবেচনা করে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ২৮শে সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কিন্তু এবার ২৮ ও ২৯শে সেপ্টেম্বর যে কোন একদিন দিবসটি পালনের নির্দেশনা থাকায় বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রাজবাড়ীতে ২৯শে সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ছাড়া সরকারী-বেসরকারী যে কোন প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে প্রায় ৪২ হাজার কর্মকর্তাকে তথ্য অধিকার আইনে উল্লেখিত গোপনীয় তথ্য ছাড়া সেই দপ্তরের যে কোন তথ্য প্রদানের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের যে কোন নাগরিক নির্দিষ্ট ফরমে আবেদনের মাধ্যমে যে কোন দপ্তরের তথ্য পেতে পারেন। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রথমেই ছিল দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া এবং তারপরই ছিল তথ্যের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করা। কারণ যদি তথ্যের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করা যায় তাহলে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হবে। বর্তমানে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের অনেকেই জানে না যে দেশের যে কোন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের যে কোন বিষয়ে তথ্য জানার অধিকার তার রয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্য জানার অধিকারের বিষয়টি সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে সকল সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কাজের স্বচ্ছতা অনেকাংশে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেটি করা গেলে সরকারের ২০৩০ সালের ভিশন অনুযায়ী উন্নত বাংলাদেশে গড়ার ক্ষেত্রে খুব সহজেই এসডিজি বাস্তবায়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তাই আমাদের উচিত যে কোন প্রতিষ্ঠানের যে কোন বিষয়ে তথ্য পাওয়ার অধিকার তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী রয়েছে-সেই বার্তাটি দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌছে দেয়া। তাহলেই আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।