॥সোহেল মিয়া॥ বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু। এই পদ্মা সেতু নির্মাণ সরকারের সবচেয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ। সকল আলোচনা-সমালোচনা, ষড়যন্ত্র রুখে পদ্মার বুকে এখন দৃশ্যমান সেতুটি। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটির পিলার। প্রতিটি পিলারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন। যে সেতু বাস্তবায়নে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নসহ অর্থনৈতিক কর্মকা- বৃদ্ধি পাবে। ভাগ্য খুলবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর।
পদ্মার বুকে ভাসছে বাংলার ১৭ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খা। এখন শুধু অপেক্ষা আকাশ ছোঁয়ার। তেত্রিশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু চালু হলে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক পথে যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলা। এখন অপেক্ষা, কখন দ্বার খুলবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। প্রবাহমান প্রমত্তা পদ্মার উপর দিয়ে ছুটে চলবে যানবাহন ও ট্রেন। তবে সেতু নির্মাণ কাজের সংশ্লিষ্টরা আশা করছে, যে দুর্বার গতিতে নির্মাণ কাজ চলছে-এ রকম গতিতে চলতে থাকলে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই জনসাধারণের জন্য ঊন্মুক্ত হতে পারে পদ্মা সেতুর দ্বার।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতুটির নির্মাণ কাজের এরই মধ্যে ৮১ শতাংশ শেষ হয়েছে। নদী শাসনের অগ্রগতি হয়েছে ৫৯ শতাংশ। আর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৭১ ভাগ। এছাড়া জাজিরা ও মাওয়া সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এরিয়া-২ এর কাজ শেষ হয়েছে শতভাগ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়াবে ১.৫ শতাংশ। যাতে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি মিলবে। আর এতে দারিদ্র বিমোচন হবে শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
স্বপ্নের দ্বিতল পদ্মা সেতুটির উপরের তলায় থাকছে চার লেনের সড়ক। আর নীচের তলাতে চলবে ট্রেন। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত এই সেতুটি নির্মাণ করছে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রীজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানী। নদী শাসনের কাজ করছে চীনেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। আর নদীর দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।