শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

অগ্রণী ব্যাংকের ৭৪৫ জন স্নাতকোত্তর মাঠ সহকারীর চাকুরী স্থায়ী করার দাবী

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ সরকারী মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ২০১১ সালের ১লা আগস্ট থেকে ৭৪৫ জন স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীকে মাঠ সহকারী পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে কোন রকম নিয়োগপত্র ছাড়াই নিয়োগ দিয়ে ঋণ আদায়, বিতরণ ও সাধরণ ব্যাংকিং কার্যক্রমে নিয়োজিত করা হয়।
পরবর্তীতে মাঠ সহকারীরা স্থায়ী করার আবেদন ও আন্দোলন করার একপর্যায়ে গত ২১/১০/২০১৮ ইং তারিখে সাবেক অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত এবং এমডি শামসুল ইসলামকে চিঠি দেন। চিঠিতে নভেম্বর/২০১৮ এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের সকল অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু এখনো সে প্রতিবেদন দাখিল করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ব্যাংকের এমডি ৭৪৫ জন মাঠ সহকারী/এসিস্ট্যান্ট অফিসার(পল্লী ঋণ) গ্রেড-২ এর পদ সৃষ্টির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বরাবর ৩টি চিঠি দেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সেই চিঠির কোন জবাব অগ্রণী ব্যাংকের হেড অফিসে আজও পৌঁছেনি। বরং অর্থ মন্ত্রাণালয় প্রথম আলো পত্রিকা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক নির্দেশনার মাধ্যমে বলেছে যে, পদ সৃষ্টির দায়িত্ব অগ্রণী ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনার, যখন থেকে এটি লিমিটেডে (২০০৭) রূপান্তরিত হয়েছে এবং নিজস্ব নিয়োগ প্রবিধানমালা(২০০৮) প্রণয়ন করেছে।
অন্য দিকে অগ্রণী ব্যাংকের পুনঃ নিয়োগকৃত এমডি বলছেন যে, তার একার পক্ষে তাদের চাকুরী স্থায়ী করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন ঠেলাঠেলিতে ৭৪৫ জন উচ্চ শিক্ষিত মাঠ সহকারী দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হচ্ছে। যারা বেতন পান No work, no payment ভিত্তিতে, যাদের নাই কোন নির্দিষ্ট বেতন, ছুটি, চাকরীর নিশ্চয়তা। চাকরীচ্যুতির আশংকাও বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। ইতিমধ্যে ৭৪৫ জনের বয়সই ৩০ বছর পার হয়ে গিয়েছে। ফেনীর লিঠনসহ কয়েকজন মাঠ সহকারী দূরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের পরিবার অত্যন্ত অভাব-অনটনে দিনযাপন করছেন। ব্যবস্থাপনার অবহেলায় কেউ কেউ চাকরী ছেড়ে দিয়ে বেকার হয়ে বসে আছেন। কেউবা অন্যত্র চাকরী নিয়েছেন। সরকারী চাকরীজীবীদের কাজের পারফরমেন্স রিপোর্ট বছরের শেষে দেয়া হলেও মাঠ সহকারীদের পারফরমেন্স রিপোর্ট প্রতি তিন মাস অন্তর হেড অফিসে পাঠানো হয়। যদিও সেখানে তাদের সকল কাজের পারফরমেন্স রিপোর্ট থাকে না। তবুও তাদের সেই ত্রৈ-মাসিক রিপোর্টগুলো অত্যন্ত সন্তোষজনক। বিভিন্ন শাখাতে নিয়োজিত মাঠ সহকারীরা ঋণ প্রদান, কিস্তি সংগ্রহ, কৃষকের হিসাব খোলা ও সাধারণ হিসাব খোলা, বয়ষ্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান, পেনশন প্রদান, রেমিটেন্স প্রদান ও বিভিন্ন ডকুমেন্টস তৈরী করে থাকেন।
মাঠ সহকারীরা জানান, তারা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা বা তার চেয়েও বেশী সময় কাজ করেন। দিন শেষে পান মাত্র ৬৫০/- টাকা, যা দ্বারা তাদের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনকি জরুরী ঋণ আদায়ের কাজে ছুটির দিনগুলোতেও তারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে ঋণ আদায় করেন কিন্তু সে জন্য তারা কোন বেতন-ভাতা পান না। অসুস্থ হয়ে কাজে যেতে না পারলে তাদেরকে কোন বেতন দেয়া হয় না। ব্যাংক বন্ধ থাকলেও তারা কোন বেতন পান না। এছাড়া তাদেরকে যে হারে মজুরী প্রদান করা হয় সেটা ব্যাংকে নিয়োজিত অষ্টম শ্রেণী পাশ এমএলএসএস/ড্রাইভারের চেয়ে মাত্র ১০০/-টাকা বেশী। অথচ তাদের সমান ডিগ্রীধারী একজন স্থায়ী অফিসার পান ৫গুণ বেশী, সিনিয়র অফিসার পান ৯গুণ বেশী এবং ক্রমান্বয়ে উচ্চ পদে নিয়োগকৃতরা পান ২৫/২৬ গুণেরও বেশী সুযোগ-সুবিধা।
সম্প্রতি গত ০২/০৯/২০১৯ইং তারিখে স্থায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য অগ্রণী ব্যাংক মুনাফার অংশ হতে মূল বেতনের ৩.২৫ গুণ ইনসেনসিভ বোনাস প্রদান করলেও অস্থায়ীদের দেয়া হয়েছে ২ গুণ। তাও প্রায় দশ দিন পরে। অথচ মুনাফা অর্জনে অস্থায়ী মাঠ সহকারীদের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। উপরন্তু, অগ্রণী ব্যাংকের গ্রামীণ শাখাগুলোতে বর্তমানে লোকবল সংকট রয়েছে যথেষ্ট। অস্থায়ী কর্মী হওয়াতে মাঠ সহকারীরা T-24 software আইডিতে কাজ করার সুযোগ পান না। তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণ করা হলে লোকবল সংকটের সমাধান হতে পারতো। সার্বিক বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি ভুক্তভোগী মাঠ সহকারীরা অতিসত্বর তাদের চাকুরী স্থায়ী করে যোগ্যতার ভিত্তিতে পদবী ও বেতন নির্ধারণের জোরালো দাবী জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!