॥চঞ্চল সরদার॥ সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলায়ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গতকাল ২৬শে আগস্ট পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলায় ২৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
তাদের মধ্যে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ২৮ জন, যার মধ্যে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ২৬ জন ও পাংশায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যরা চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে বাড়ী ফিরে গেছে।
রাজবাড়ীর হাসপাতালগুলোতে এখনও কোন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে এই জেলায় দুই জন ডেঙ্গু রোগে মারা গেছে। তাদের একজন ঢাকায় ও অন্য জন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই ঢাকা আক্রান্ত হয়ে রাজবাড়ীতে এসেছে। তবে এই জেলা থেকে কখনোই ঢাকায় যায়নি, এমন মানুষও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজবাড়ী সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন শুভ বলেন, আমি বাড়ীতেই থাকি। কখনও ঢাকায় যাইনি। তার আমার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। কয়েকদিন আগে অসুস্থ হলে মনে করেছিলাম জন্ডিস হয়েছে। তাই জন্ডিসের পরীক্ষা করাই। কিন্তু তাতে কিছু ধরা পড়েনি। পরে রাজবাড়ী মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়ে। এরপর গত শনিবার সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হই। রবিবার থেকে শরীরের অবস্থা বেশী খারাপ।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দীপক কুমার বিশ^াস বলেন, ঈদের পর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম ছিল। বর্তমানে আবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ৯ জন গত ২৪ ঘন্টায় এখানে ভর্তি হয়েছে। গত জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত সদর হাসপাতালে মোট ২০২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এখানে যেসব রোগী এসেছে তার মধ্যে অল্প কিছু রোগীকে আমরা এখান থেকে রেফার করেছি, বাকীরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ীতে ফিরে গেছে।
সির্ভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ১২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯৬ জন। বর্তমানে ২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে, তার মধ্যে ২৬ জন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে এবং ২জন পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। যেভাবে ডেঙ্গু নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে তাতে মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। সবার প্রচেষ্টার মাধ্যমে ডেঙ্গু আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। এটা নিয়ে আতংকের কোন কারণ নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, এনজিওসহ সকলেই এ ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছে।