রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৩:০৫ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত উদয়পুর নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা আইডিয়াল একাডেমী !

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৯

॥আশিকুর রহমান/সুশীল দাস॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা আইডিয়াল একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনের বিরুদ্ধে একাডেমীর নীতিমালা বহির্ভুত শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপ, কর্তব্যে অবহেলা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগে ৩দফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ম্যানেজিং কমিটি। অনুলিপি প্রদানের মাধ্যমে যথারীতি বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়। এরপর ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের অনুমোদন চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করা হয়।
কিন্তু চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার হওয়া দূরে থাক, উল্টো তাকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে। সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানার সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে তাসলিমা খাতুন তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ধামাচাপা দিতে সক্ষম তো হয়েছেনই, উপরন্তু অবৈধভাবে ম্যানেজিং কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে তার প্রস্তাব অনুযায়ী এডহক কমিটিও অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন! এভাবে তিনি বসন্তপুর ইউনিয়নের খ্যাতনামা নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের কব্জায় নিয়ে লুটপাট আর স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সেটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছেন।
একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন গাজী জানান, গত ২৮/০৮/২০১৮ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘বিগত বছরগুলোর আয়-ব্যয় ও প্রতিষ্ঠানের কিছু ত্রুটিপূর্ণ কাজের বিষয়ে’ ০৮/০৯/২০১৮ইং তারিখের পরবর্তী সভায় প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনকে উপস্থাপনের(প্রদর্শনের) জন্য বলা হয়। কিন্তু তা প্রদর্শন না করায় ০৮/০৯/২০১৮ ইং তারিখের সভায় ‘কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা নোটিশ প্রাপ্তির ৭দিনের মধ্যে উপযুক্ত কারণসহ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য’ কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই অনুযায়ী ০৪/১০/২০১৮ইং তারিখে বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মারফত এবং ০৭/১০/২০১৮ইং তারিখে ডাকযোগে ১ম কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ৯৮টি দফার অনিয়মের কারণ দর্শাতে বলা হয়। কিন্তু তিনি কোন জবাব দাখিল না করায় ২২/১০/২০১৮ইং তারিখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পরবর্তী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে পুনরায় ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে উল্লেখিত বিষয়ে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করতে বলা হয়। সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, অনিয়মগুলোর সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাছলিমা খাতুন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন এবং বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক ওলিউল্লাহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এরপরও তাসলিমা খাতুন জবাব দাখিল না করায় ১১/১১/২০১৮ইং তারিখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পরবর্তী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬/১১/২০১৮ইং তারিখে তাকে ৩য়বারের মতো নোটিশ প্রদান করে পত্র প্রাপ্তির ৭কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য বলা হয়। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ গৃহীত হবে বলে জানানো হয়। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মারফত এবং ডাকযোগে নোটিশগুলো হাতে পেলেও তা উপেক্ষা করে কোন জবাব না দেওয়ায় ২১/০১/২০১৯ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরদিন ২২/০১/২০১৯ইং তারিখ থেকে তাকে ‘সাময়িক বরখাস্ত’ করা হয়। এতে ‘বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের কর্তৃক প্রদেয় বিভিন্ন খাতে টাকার রশিদের মুরি বহির গড়মিল, বিদ্যালয়ের সঞ্চয়ী হিসাবে সাধারণ তহবিল সংরক্ষণ না করে জটিলতা তৈরীর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, বিভিন্ন অনিয়মের ক্ষেত্র চিহ্নিত পূর্বক পরিদর্শন বহিতে দিক-নির্দেশনা ও বারবার মৌখিক তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও স্বেচ্ছাচারীতা, কর্তব্যে অবহেলা, বিদ্যালয়ের অর্থ তসরুপ(আত্মসাত) এবং ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি ছাড়া ছুটিতে যাওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়।’ এছাড়াও তাকে সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি ৫কর্মদিবসের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওলিউল্লাহকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ০৪/০২/২০১৯ইং তারিখের সভায় এ সংক্রান্তে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি (প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল হোসেন গাজী, ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ ওলিউল্লাহ সেখ এবং অভিভাবক সদস্য মোঃ ইসমাইল হোসেন মুন্সী) গঠন করা হয়।
উক্ত তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্ত করার পর ১১/০২/২০১৯ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনের বিরুদ্ধে হিসাব বিবরণীতে উল্লেখিত ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ১শত টাকার কোন ভাউচার না থাকা ও আদায়কৃত রশিদ বইয়ের ২২৩৬টি পাতার অর্থ হিসাব বিবরণীতে উল্লেখ না করাসহ বিদ্যালয়ের বিশাল অংকের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তুলে ধরে তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করার নিমিত্তে আরবিট্রেশন বোর্ডে সুপারিশ করার এবং বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী চিত্তগোপাল সরকারকে সাময়িক বরখাস্তের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ম্যানেজিং কমিটি বরাবর সুপারিশ করা হয়। সেই সাথে বিষয়টি বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের নজরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তুলে ধরার জন্য সুপারিশ করা হয়। এরপর ১৭/০২/২০১৯ইং তারিখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান বরাবর পত্র দিয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনকে চূড়ান্ত বরখাস্তের জন্য অনুমোদন প্রার্থনা করা হয়। আবেদনের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির ০৮/০৯/২০১৮ ইং তারিখের সভার কার্যবিবরণী, ০৪/১০/২০১৮, ২২/১০/২০১৮ ও ১৬/১১/২০১৮ইং তারিখের কৈফিয়ত তলব ও প্রাপ্তি স্বীকার, ২১/০১/২০১৯ইং তারিখের সাময়িক বরখাস্ত, ১১/০২/২০১৯ইং তারিখের তদন্ত প্রতিবেদন এবং ০৪/০২/২০১৯ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্তের ফটোকপিসহ মোট ২১ ফর্দ কাগজ সংযুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু অদ্যাবধি চূড়ান্ত বরখাস্তের সেই অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
উপরন্তু রাজবাড়ী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগসাজশে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুন অবৈধভাবে জোরপূর্বক পদ আঁকড়ে রেখে ইচ্ছামতো বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। বিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত ৫জন শিক্ষকের মধ্যে তিনি তার অনুগত একজন সহযোগী শিক্ষক ছাড়া অন্যায়ের প্রতিবাদকারী অপর ৩জন শিক্ষককে (ওলিউল্লাহ, আব্দুর রব, সুরাইয়া ফারজানা রূপা) ক্লাস নেয়া, পরীক্ষার খাতা দেখাসহ কোন দায়িত্ব পালনেরই সুযোগ দিচ্ছেন না। অফিস সহকারী, পিয়ন, এমনকি বহিরাগত এনে বিদ্যালয়ের ক্লাস করাচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন গাজী আরো জানান, আমাদের কমিটির ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৩/০২/২০১৭ইং তারিখে। সে মোতাবেক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ১২/০২/২০১৯ইং তারিখে। সে কারণে কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওলিউল্লাহ খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা কমিটির সভায় উপস্থাপন করলে কমিটি অনুমোদন দেয়। ০৩/১১/২০১৮ইং তারিখে সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওলিউল্লাহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৩১/১২/২০১৮ইং তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানাকে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনের পক্ষ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ৩১/১২/২০১৮ইং তারিখের চিঠি মোতাবেক নির্বাচনের জন্য ৪৩ দিন সময় থাকতেও তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ০৭/০১/২০১৯ইং তারিখে এক পত্রের মাধ্যমে দাবী করেন, কমিটির মেয়াদ বিগত ০৬/১০/২০১৮ইং তারিখে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠন করতে হবে। এরপর সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবিত এডহক কমিটি বোর্ডে প্রেরণ করে অনুমোদন চাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ২৭/০২/২০১৯ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগপত্র দিয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবিত এডহক কমিটির অনুমোদন না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। তা সত্ত্বেও সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তদবির করে সেই কমিটির অনুমোদন হাসিল করতে সক্ষম হয়েছেন। এরপর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন।
বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদকারী শিক্ষক ওলিউল্লাহ, আব্দুর রব, সুরাইয়া ফারজানা রূপাকে ক্লাস নেয়া বা পরীক্ষার খাতা দেখাসহ কোন দায়িত্ব পালনেরই সুযোগ দিচ্ছেন না। অফিস সহকারী, পিয়ন ও বহিরাগত ছাত্রদের এনে বিদ্যালয়ের ক্লাস করাচ্ছেন।
মোঃ আবুল হোসেন গাজী বলেন, নারী শিক্ষা প্রসারের জন্য বহু কষ্টে তিল তিল করে তিনি প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। কিন্তু সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনের নীতিমালা বহির্ভুত শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপ, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার জন্য প্রতিষ্ঠানটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। বারবার মৌখিকভাবে বলা ও লিখিত নির্দেশ-নির্দেশনা দেয়া সত্ত্বেও তিনি বিদ্যালয়ের একটি টাকাও ব্যাংকে জমা করেননি। কখনো বিল-ভাউচার দাখিল করেননি। অথচ সরকার অনুমোদিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তাকে যথাযথভাবে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী চলার কথা। তিনি রশিদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করবেন, জমা স্লিপের মাধ্যমে তা ব্যাংকে জমা দিবেন এবং সভাপতির সঙ্গে যৌথ হিসাবের চেকের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে যথাযথ বিল-ভাউচারের মাধ্যমে খরচ করবেন, কিন্তু তিনি তা কোনদিনই করেননি। এ জন্যই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ৩ বার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে তারপর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়তায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। নিজের একজন অনুগত প্রতিবন্ধী শিক্ষক ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত অন্য শিক্ষকদের বাদ দিয়ে অফিস সহকারী, পিয়ন ও বহিরাগত ছাত্রদের দিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন। ছাত্রীদের চাপ দিয়ে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। এমতাবস্থায় আমি চাই বিদ্যালয়টি যথানিয়মে চলুক, অনিয়ম-দুর্নীতি দূর হোক, শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক এবং অযোগ্য, অদক্ষ, স্বেচ্ছাচারী সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা খাতুনকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হোক।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তাসলিমা খাতুন বলেন, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় রেজিস্টার/রেজুলেশন, ফাইল ও অন্যান্য কাগজপত্র নিজের কাছে রাখায় এসব সমস্যা হয়েছে। তিনি এককভাবে যখন-তখন শিক্ষক নিয়োগ দেয়াসহ বিদ্যালয়ের সকল কাজে অনাকাঙ্খিত হস্তক্ষেপ করে এসেছেন। আমি এসবের প্রতিবাদ করায় অবৈধভাবে আমাকে কথিত সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যার কোন আইনগত ভিত্তি নেই। এ জন্যই বোর্ড থেকে আমার প্রস্তাবিত এডহক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিক্ষা বিভাগ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়তায় বর্তমানে সুন্দরভাবে স্কুলটি চলছে। প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থেই অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় একই পদে বদলী হয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!