॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ার পর রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে। তার নাম আবু সাঈদ ওরফে মিরাজ(৪৫)। সে নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশ গ্রাম মীরের পাড়ার মৃত আব্দুর জব্বার শেখের ছেলে।
গত রবিবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসার পথে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাট গামী ফেরী থেকে তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে তাকে নিয়ে যায়।
হাসপাতালে আসা আবু সাঈদের বড় ভাই পরিচয় দানকারী মোঃ বেল্লাল শেখ জানান, আবু সাঈদ ওরফে মিরাজ নড়াইল সদর উপজেলায় মোটর সাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী বহন করে। গত রবিবার সকালে সে ঢাকায় যায়। ওইদিন রাত দশটার দিকে গাবতলী থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে স্বাদ পরিবহনের একটি বাসে রওয়ানা করে। মধ্যরাত পর্যন্ত তার সাথে ফোনে যোগাযোগ হয়। এরপর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অনেকটা সহজ-সরল বলেই সে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছিল। গত সোমবার তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবু সাঈদের হাসপাতালে পরে থাকার ছবি দেখে এক প্রতিবেশীকে সাথে করে গতকাল মঙ্গলবার সকালেই তারা গোয়ালন্দে আসেন।
গতকাল দুপুরে বাড়ি যাওয়ার সময় আবু সাঈদ ওরফে মিরাজ জানান, গত দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাদের বাসটি পাটুরিয়া ঘাটে ফেরীতে ওঠে। দৌলতদিয়া ঘাটে আসার পথে ফেরীতে অজ্ঞাত কয়েক ব্যক্তি তাকে কৌশলে বিস্কুট ও চকলেট খাওয়ায়। এরপর তার কি হয়েছে কিছুই বলতে পারেন না। তার দুটি মুঠোফোন ও কিছু টাকা ছিল সব খোয়া গেছে বলে দাবী করেন। নিজেই অজ্ঞান পার্টির সদস্য ও বাসের এক যাত্রীকে চকলেট খাওয়ানোর চেষ্টাকালে অন্যান্য যাত্রী মিলে উল্টো তাকে খাইয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর দেননি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ না থাকায় হাসপাতালে আসা পরিবারের লোকজনের কাছে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট এলাকার লোকজনের ভাষ্য অনুযায়ী গত সোমবার ভোর ছয়টার দিকে তিন নম্বর ফেরী ঘাটের উপরের দিকে ওই ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে নৌ-পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে সকাল সাতটার দিকে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ সময় দৌলতদিয়া নৌফাঁড়ির এএসআই শফিকুল আলম জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তিনিও জানতে পারেন ফেরীর এক বাস যাত্রীকে কিছু খাইয়ে অচেতন করার চেষ্টাকালে বাস যাত্রীরা সম্মিলিতভাবে উল্টো ওই ব্যক্তিকে খাওয়ায়। এতে সে অচেতন হয়ে পড়লে ফেরী ঘাটে রেখে যায়।