রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০২:০০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ীর রেলপথের উন্নয়নে রেলমন্ত্রীর নিকট ১২দফা প্রস্তাবনা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর রেলপথের উন্নয়নে রেলমন্ত্রী বরাবর ১২দফা প্রস্তাব সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছে জেলা মহিলা পরিষদ। গতকাল ২রা এপ্রিল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী লাইলী নাহার এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদিকা ডাঃ পূর্ণিমা দত্তের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নবনির্বাচিত রেলমন্ত্রী হিসেবে রেলের শহর রাজবাড়ীতে আগমনে(৪ঠা এপ্রিল) আমরা আপনাকে স্বাগত জানাই। বৃটিশ শাসিত ভারতবর্ষে রেলপথ চালু হওয়ার কিছুদিন পরই ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের মাধ্যমে রেলের শহর হিসেবে রাজবাড়ী প্রসিদ্ধ এবং ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের সাথে যোগাযোগের প্রধান পথ হিসেবে গোয়ালন্দ স্টীমার ঘাট ও রাজবাড়ী রেলপথ সুপরিচিত হয়ে ওঠে। এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবন-জীবিকা, শিল্প-সংস্কৃতির একটা বড় অংশ জুড়েই এই রেলপথের প্রভাব বিস্তৃত ছিল। পরে ক্রমশঃ রাজবাড়ীর নদীপথ ও রেলপথ দু’দিকেই তার ঐতিহ্য ও অবলম্বন হারিয়েছে। অথচ যে কোন ভৌগলিক এলাকার উন্নয়নের প্রধান মাধ্যম তার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই আপনার সমীপে আমাদের প্রস্তাব-রাজবাড়ী তথা দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের অপরিহার্য নৌপথে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু অবশ্যই একটা সময় সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু রাজবাড়ীর থেকে রেলপথে দেশের ও দেশের বাইরে যোগাযোগের বিষয়টি সহজসাধ্য করা রেল মন্ত্রণালয়ের ততধিক কঠিক নয় বলে আমরা মনে করি। তাই এ ব্যাপারে আপনার মন্ত্রণালয়ের আশু পদক্ষেপ গ্রহণ আমাদের প্রত্যাশা।
প্রায় দেড়শ বছর পূর্ব হতে গোয়ালন্দ স্টীমার ঘাট অর্থাৎ নৌপথে এসে সারা দেশের অধিকাংশ মানুষ রাজবাড়ী-কোলকাতা তথা বাংলাদেশ-ভারতে যাতায়াত করে এসেছে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এই যোগাযোগ পথটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ১৯৭১ সাল বাদে অদ্যাবধি রাজবাড়ী থেকে দর্শনা সীমান্ত হয়ে প্রতি বছর ভারতের মেদিনীপুরে তীর্থযাত্রীদের নিয়ে একটি স্পেশাল ট্রেন সরাসরি চলাচল করে। অর্থাৎ রেলপথটি এখনো চালু অবস্থায় আছে। যার সংস্কার ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে অতি সহজেই অসংখ্য মানুষের (রোগী, ব্যবসায়ী, ট্যুরিস্ট) ভারতে যাওয়া সহজ ও সুগম করা সম্ভব।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা অতি দুঃখের সাথে দেখছি শতবর্ষের এই ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ী-দর্শনা সীমান্ত রেলপথটি এড়িয়ে ঢাকা-কোলকাতা, যশোর-কোলকাতা, খুলনা-কোলকাতা ট্রেন চলাচল করছে। আমরা প্রত্যাশা করছি অনতিবিলম্বে ভারত সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের তথা বাংলাদেশ রেলওয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ সাপেক্ষে চলতি বছরেই এই রেল মাধ্যম পুনঃ চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম হবে। যশোর-খুলনা-রাজশাহীর সাথে রাজবাড়ীর আন্তঃ যোগাযোগের বিশেষ ট্রেনসমূহের সুযোগ-সুবিধার সার্বিক আধুনিকায়ন এবং রাজবাড়ী-খুলনা পথে পূর্বের মতো পৃথক লোকাল ট্রেনের ব্যবস্থা চালু করা করা। রাজশাহী-গোপালগঞ্জগামী ট্রেনের রাজবাড়ী স্টেশনে আসা-যাওয়ার বিরতির অথবা রাজবাড়ী-গোপালগঞ্জ পথে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ট্রেন চালু করা। রাজবাড়ী-ফরিদপুরের নিত্য যোগাযোগ সহজসাধ্য করার জন্য আর একটি ট্রেন চালুর ব্যবস্থা করা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজবাড়ী-ঢাকা যাতায়াতের ট্রেনে-নৌপথে মানুষের বিড়ম্বনা কমানোর জন্য যমুনা সেতু বা নির্মিয়মান পদ্মা সেতুর রেলপথ বা সড়ক ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য রাজবাড়ীর সাথে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের রেল যোগাযোগ সুগম করা।
রাজবাড়ী শহরের একটি বড় অংশ বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পত্তি। যা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন শ্রেণী, পেশার ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে বা বেআইনীভাবে লীজের সম্পত্তিতে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার সার্বিক চিত্র প্রকাশ্যে আনা এবং বেআইনী সকল দখল মুক্ত করে রেলের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে রেলের সম্পত্তি ব্যবহার করা। রেলের মাঠকে সুষ্ঠুভাবে উন্মুক্ত রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।
রাজবাড়ীর অন্যতম ঐতিহ্য আজাদী ময়দানকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং রেল কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই ময়দান বিভিন্ন জনসভার জন্য উন্মুক্ত করা। আজাদী ময়দানে ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে হল এতদঅঞ্চলের শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে একসময় গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছে। দীর্ঘ অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় যা পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিজে অথবা শর্তাধীনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংযোগে এই হলটিকে আধুনিক একটি অডিটোরিয়াম হিসেবে ব্যবহারের উপযুক্ত করা এবং এই রেলওয়ে হল ও তৎসম্মুখের ঐতিহ্যবাহী টেনিস গ্রাউন্ডের চারপাশ থেকে সকল রকমের অনাকাঙ্খিত দখল মুক্ত করা। ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ী লোকশেডের বন্ধাবস্থা বাতিল করে পুনঃ রেলওয়ে কর্মকান্ডে সচল করা। রেলওয়ের বিভাগীয় সদর দপ্তর রাজবাড়ী শহরেই প্রতিষ্ঠা করা। চালু রেলপথসমূহে প্রয়োজনীয় পাথর দেয়া এবং ওভারব্রীজসমূহসহ রাজবাড়ী রেলস্টেশন আধুনিক করা।
বর্তমান সরকার সারা দেশে রেল উন্নয়নের যে কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সেই লক্ষ্য অর্জনে রাজবাড়ী জেলা তথা ঐতিহ্যগত কারণেই রেলের সম্পত্তি পুনরুদ্ধার, রেলপথ, রেল ব্যবস্থা ও রেল যোগাযোগ উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন, এমপি আগামীকাল ৪ঠা এপ্রিল রাজবাড়ী সফরে আসছেন।
সফরসূচী অনুযায়ী, ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি রাজবাড়ী সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছাবেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবে। বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন, ৪টায় আজাদী ময়দান সংলগ্ন রেলভূমিতে প্রস্তাবিত অডিটোরিয়াম নির্মাণের স্থান পরিদর্শন এবং সোয়া ৪টায় আজাদী ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগদান শেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!