॥স্টাফ রিপোর্টার॥ নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের নামে রাজবাড়ী শহরে বিভিন্ন যানবাহনের গ্লাস ও গাছপালা ভাংচুর, চালকদের নগদ টাকাসহ মোবাইল ছিনতাই, সরকারী কাজে বাঁধা এবং দুই কনস্টেবলকে মারপিট করে আহত করার ঘটনায় অজ্ঞাত ২০০জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
গত ১২ই আগস্ট এস.আই আবু শহীদ বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-১১। ধারাঃ ১৪৭/৩৪১/৩৩২/৩৫৩/৩৭৯/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোর্ড।
মামলা সুত্রে প্রকাশ, গত ৪ঠা আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ী শহরের পান্না চত্ত্বর এলাকায় ইউ মার্কেটের সামনে স্কুল ড্রেসে ছাত্র-ছাত্রীরা ও সাদা পোষাকে কতিপয় যুবক এবং বিভিন্ন বয়সের উশৃঙ্খল জনতা ১৫০ থেকে ২০০জন মিলে পরিকল্পিতভাবে ১নং রেলগেটের দিকে লাঠিশোঠা লোহার রডসহ দৌড়াইয়া সরকার বিরোধী বিভিন্ন উত্তেজনাকর শ্লোগান দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা অতর্কিতভাবে হামলা করে যানবাহন ভাংচুর করে এবং বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশী করে।
এছাড়াও তারা রাস্তার মাঝখানের আইল্যান্ডে থাকা বিভিন্ন গাছপালা ভাংচুর করে ক্ষতি সাধান করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চেষ্টা করলে আবারো তারা যানবাহনে তল্লাশী ও ভাংচুর কাজে লিপ্ত হয়ে চালক ও যাত্রীদের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল, নগদ ২৫হাজার ২শ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাদেরকে বাঁধা প্রদান করতে গেলে তারা কনস্টেবল ফায়েকুজ্জামান ও আলমগীরের শার্টের কলার চেপে ধরে বোতাম ছিড়ে ফেলাসহ তাদেরকে মারপিট করে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা ৩/৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাজবাড়ী সরকারী মহিলা কলেজের সামনে, রাজবাড়ী কোর্টের প্রবেশদ্বারের রাস্তায় ও বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন থামিয়ে তল্লাশী ও যানবাহনের সামনের গ্লাসে বিভিন্ন শ্লোগান লেখে। এসব কর্মকান্ডে পথচারী ও সাধারণ লোকজন আতংকগ্রস্ত হয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনার ৮দিন পর রাজবাড়ী থানার এস.আই আবু শহীদ মামলাটি দায়ের করেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত মামলায় কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
বিভিন্ন সুত্র জানায়, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের নামে গত ৪ঠা আগস্ট সকাল ১০টা থেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাজবাড়ী শহরকে অশান্ত করে তোলা হয়। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজবাড়ী সরকারী মহিলা কলেজ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে এবং ১নং ও ২নং রেলগেট এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ড্রেসে সাধারণ শিক্ষার্থী, ড্রেস বিহীন সরকার বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভের নামে তান্ডব অংশ নেয়। এ আন্দোলনে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষকরাও এতে অংশগ্রহণ করে।
শহরে বিক্ষোভের খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী ও পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি, বিপিএম-সেবা সহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাগণ ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মাঠে নেমে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়াও বিক্ষোভ কর্মসূচী চলাকালে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী বুঝিয়ে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠাতে দেখা গেছে।