॥স্টাফ রিপোর্টার॥ সাপ্তাহিক সরকারী ছুটির দিনেও কর্মব্যস্ত রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী গতকাল ১০ই আগস্ট সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভূক্ত আশ্রয়ণ-২ কর্মসূচীর ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় গৃহ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম মনোয়ার মাহমুদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিজয় কুমার প্রামানিক এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সচিবগণসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক প্রথমে সকাল ১০টায় সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে ওই ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত ১২টি ঘরের নির্মাণ কাজ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি ১২টি ঘরের ২৫২টি আরসিসি খুঁটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
সুলতানপুর খেয়াঘাট এলাকায় উপজেলা কমিটি কর্তৃক নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবির এন্টারপ্রাইজ এই খুঁটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে। এ ইউনিয়নে এখনও গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। খুঁটির নির্মাণ কাজ ২/১ দিনের মধ্যে শেষ হলেই গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসককে জানান। জেলা প্রশাসক তাকে অতি দ্রুত বরাদ্দকৃত গৃহের নির্মাণ কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেন।
সেখান থেকে জেলা প্রশাসক বসন্তপুর ইউনিয়নের ১০টি ঘরের ২১০টি আরসিসি খুঁটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। সেখানে এখনও ২১টি খুঁটির নির্মাণ কাজ বাকী আছে। বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর এলাকায় উপজেলা কমিটি কর্তৃক নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শোভন এন্টারপ্রাইজ এই খুঁটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে। খুঁটির নির্মাণ কাজ দেখার পর দেখার পর জেলা প্রশাসক বসন্তপুর ইউনিয়নের কোলা গ্রামের কৃষক সুজন মন্ডলের গৃহ নির্মাণ কাজ দেখতে যান। সেখানে গৃহের খুঁটি পাওয়া সত্ত্বেও এখনো নির্ধারিত স্থানের মাটি উন্নয়ন ও খুঁটি স্থাপন করা হয়নি। সেখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত কাঠমিস্ত্রীরা কাঠের কাজ করছে। খুঁটিগুলো রাস্তার দু’ধারে ফেলে রাখায় যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। খুঁটিগুলো নিরাপদ স্থানে রেখে গৃহের নির্মাণ কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসক নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি গৃহের বরাদ্দপ্রাপ্ত কৃষক সুজন মন্ডল, তার স্ত্রী ও পিতার সাথে কথা বলেন এবং প্রাক্কলন অনুযায়ী গৃহের নির্মাণ কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য তাদেরকে পরামর্শ দেন।
এরপর জেলা প্রশাসক মূলঘর ইউনিয়নেরর রশোড়া বাজার এলাকায় মেসার্স ডিউক এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক ওই ইউনিয়নের ১৭টি গৃহের ৩৫৭টি খুঁটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় তিনি খুঁটিতে সঠিক মানের ও পরিমাপের রড ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করেন। এই ইউনিয়নে এখনো গৃহের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। খুঁটির নির্মাণ কাজ ২/১ দিনের মধ্যে শেষ হলেই গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসককে জানান। জেলা প্রশাসক তাকে অতি দ্রুততার সাথে বরাদ্দকৃত গৃহের নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
খুঁটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মূলঘর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন এবং রশোড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর ঘুরে দেখার পর মূলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে বরাদ্দকৃত ১৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সেখান থেকে জেলা প্রশাসক পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে ওই ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত ৬১টি ঘরের নির্মাণ কাজ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় শেষে জেলা প্রশাসক কোনাইল গ্রামে রওশন আরার অনুকূলে বরাদ্দকৃত গৃহের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। তার গৃহের খুঁটি স্থাপন ও চালের কাঠের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে । ২/১ দিনের মধ্যে চালের টিন ও বেড়ার কাজ শুরু করা হবে বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান। গৃহের বরাদ্দ গ্রহীতাকে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক পরামর্শ প্রদান করেন।