॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার পশ্চিম মূলঘরে নৃশংসভাবে খুন হওয়া দাদী শাহিদা বেগম(৫০) ও নাতনী লামিয়ার(৭) হত্যাকারীদের গত ৩দিনের সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তবে কিলারদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
গত ৪ঠা আগস্ট রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নিহতদের লাশ হস্তান্তরের পর বাদ আসর পশ্চিম মূলঘর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাযে নামাজ শেষে দাফন করা হয়। জানাযাতে ইমামতি করেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আহম্মদ খান।
দাফনের পর নিহত লামিয়ার পিতা শহিদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, লামিয়া ছিল আমার প্রথম সন্তান। তাকে অনেকবার ঢাকায় নিয়ে যেতে চেয়েছি কিন্তু লামিয়া যায়নি। সে বলতো আমি দাদীর কাছে থাকবো। এখন দাদীর পাশেই তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করলাম।
নিহতদের লাশের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আলী আহসান তুহিন জানান, ধারালো ভারী অস্ত্র দিয়ে শাহিদা এবং লামিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। একটি মানুষকে হত্যার জন্য এতগুলো আঘাতের প্রয়োজন হয় না, যা খুনীরা করেছে। খুন হওয়া শাহিদার ধর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল। ঘাড় থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত ৮/১০টি বড় ধরণের কোপের দাগ রয়েছে। আর লামিয়ার শরীরে ৫টি কোপের আঘাতের চিহ্ন ছিল। হত্যার পূর্বে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তার পরীক্ষার জন্য ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
রাজবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তারিক কামাল জানান, এ ঘটনায় নিহত লামিয়ার পিতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের নামে রাজবাড়ী সদর থানার মামলা নং-৪, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোর্ড দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোঃ মেজবাউদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত বাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২রা আগস্ট দিনগত রাতের কোন সময় জোড়া হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। থানার এস.আই মোঃ মেজবা উদ্দিন মামলাটির তদন্ত করছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
নিহতের পরিবার সুত্র জানায়, নিহত শাহিদার বেগম দেড় বছর পূর্বে সংসারে অভাবের কারণে রাজবাড়ী জুটমিলে কাজ করতো। এরপর পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে মিলে কাজ করা বন্ধ করে দেন। জুট মিলের একজন মোবাইলে দিনে এবং রাতে তাকে বিরক্ত করতো। জীবিত অবস্থায় শাহিদা তার সন্তানকে এমন ঘটনা জানান।
নিহত শাহেদা বেগমের মেয়ে সুমি খাতুন জানান, তার মাকে স্থানীয় কতিপয় যুবক রাতে মোবাইলে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। এছাড়া বাড়ীর পাশের এক যুবক কারণে-অকারণে বাড়ীর সামনে দিয়ে ঘুরাফেরা করতো।