॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার পশ্চিম মূলঘরে দাদী শাহিদা বেগম(৪৫) ও নাতনী লামিয়া আক্তার (৭)কে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গত ৩রা আগস্ট নিহত শিশু লামিয়ার বাবা গার্মেন্টেস কর্মী শহিদুল ইসলাম(৩২) বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
গত ২রা আগস্ট দিনগত রাতের কোন এক সময় জোড়া হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। রাজবাড়ী সদর থানার মামলা নং-৪। ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোর্ড। থানার এস.আই মোঃ মেজবা উদ্দিন মামলাটির তদন্ত করছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
মামলা সুত্রে প্রকাশ, শাহিদা বেগমের স্বামী শাজাহান মিয়া ঢাকায় রড মিস্ত্রির কাজ করেন এবং তার ছেলে শহিদুল ইসলাম(লামিয়ার বাবা) স্ত্রীসহ ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকুরী করেন। যে কারণে বাড়ীতে লামিয়া তার দাদী শাহেদার কাছে থাকতো। গত ২রা আগস্ট দিবাগত রাত ৯টার দিকে শাহেদা বেগম ও তার নাতনী লামিয়া রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ে। পরদিন বেলা ১১টার দিকে শোবার ঘরের দুইটি দরজার মধ্যে একটি খোলা দেখতে পেয়ে প্রতিবেশী শফিক শেখ দরজার সামনে গিয়ে লামিয়াকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ না পেয়ে তিনি ঘরের মধ্যে উকি দিয়ে দেখেন তাদের দুইজনের মৃত দেহ গলাকাটা অবস্থায় বিছানার উপর পড়ে আছে। এরপর তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ঘটনা দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। এরপর শফিক শেখ মোবাইলে বিষয়টি শহিদুলকে জানান। খবর পেয়ে শহিদুল ও তার স্ত্রী এবং তার বাবা ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসেন। শহিদুলের ধারণা রাতের কোন এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তার মা ও মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
নিহতের পরিবারের একটি সুত্র জানায়, নিহত শাহিদার বেগম দেড় বছর পূর্বে সংসারে অভাবের কারণে রাজবাড়ী জুটমিলে কাজ করতো। এরপর পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে মিলে কাজ করা বন্ধ করে দেন। জুট মিলের একজন মোবাইলে দিনে এবং রাতে তাকে বিরক্ত করতো। জীবিত অবস্থায় শাহিদা তার সন্তানকে এমন ঘটনা জানান।
নিহত শাহেদা বেগমের মেয়ে সুমি খাতুন জানান, তার মাকে স্থানীয় কতিপয় যুবক রাতে মোবাইলে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। এছাড়া বাড়ীর পাশের এক যুবক কারণে-অকারণে বাড়ীর সামনে দিয়ে ঘুরাফেরা করতো।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোঃ মেজবাউদ্দিন জানান, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।