॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৩১শে জুলাই সকাল ১০টায় প্রস্তুতিমূলক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিন, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আলীমুর রেজা, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার পাল, ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার মুনমুন ও বিটিভির জেলা প্রতিনিধি সানাউল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের কালোরাত্রিতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শাহাদতবরণকারী সকল সদস্য, জাতীয় চার নেতা ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী দোসরদের ষড়যন্ত্রে এদেশীয় কিছু কুলাঙ্গারের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেছিলেন। শুধু তিনিই নন, এই ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন জাতীয় চার নেতাসহ তার সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল জামিলও শাহাদতবরণ করেছিলেন। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় ১৫ই আগস্ট জাতির জনকের শাহাদত বার্ষিকীকে বাঙালী জাতি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান স্বাধীনতার সপক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তারই ধারাবাহিকতায় সারা দেশের ন্যায় যথাযোগ্য মর্যাদায় আগামী ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এবার অধিক গুরুত্ব সহকারে দিবসটি পালন করা হবে এবং সকল সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও সভায় ১৫ই আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ঃ জাতীয় শোক দিবসের পূর্বের দিন ১৪ই আগস্ট বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রচনা, চিত্রাংকন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, ছড়াপাঠ, কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, ১৫ই আগস্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকার, আধা সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির জনকের ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সোয়া ৯টায় কালো ব্যাজ ধারণ ও শোক র‌্যালী, সকাল ১০টায় আ¤্রকানন চত্বরে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ, বাদ যোহর জেলার সকল মসজিদে জাতির জনক ও তার পরিবারের শাহাদতবরণকারী সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
এছাড়াও জেলা তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় ১৫ই আগস্টের আগের ২দিন থেকে পরের ২দিন পর্যন্ত জেলার ৫টি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর উপরে নির্মিত বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন, ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে যুব ঋণ বিতরণ করা হবে। একই দিন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শোক দিবসের উপর আলোচনা করা হবে।