॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ আদালতের আদেশে পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী পৌর মহাশ্মশান থেকে গতকাল ২৮শে জুলাই বেলা ১১টায় নিহত ব্যবসায়ী নিতাই সরকার(৩২) এর লাশ উত্তোলন করা হয়।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মহিউদ্দিনের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলনের সময় সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ এস.এম তারেক আনাম, রাজবাড়ী সদর থানার এস.আই বদিয়ার রহমান ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, আদালতের আদেশে পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য নিহতের পরিবারের সদস্যদের শনাক্তের প্রেক্ষিতে নিহত নিতাই সরকারের লাশ রাজবাড়ী পৌর মহাশ্মশান থেকে উত্তোলন করা হয়। ময়না তদন্তের শেষে মৃতদেহটিকে আবার রাজবাড়ী মহাশ্মশানে সমাহিত করা হবে।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ এস.এম তারেক আনাম জানান, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আলী আহসান তুহিন, ডাঃ সারোয়র জাহান ও ডাঃ জোবায়েরকে নিয়ে রাজবাড়ী মর্গে পুনরায় ময়না তদন্ত করা হবে। পুনরায় ময়না তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
নিহতের পিতা সুকুমার সরকার বলেন, আমার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ার প্রেক্ষিতে অর্থের বিনিময়ে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছিল। কিন্তু আমার মামলার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত গত ২৬শে জুলাই পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করেন। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
উল্লেখ্য, নিহত নিতাই সরকার রাজবাড়ী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের পুরাতন হরিসভা এলাকার সুকুমার সরকারের ছেলে। তিনি রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়কের ইংলিশ পৌর মার্কেটে ‘সরকার থাই গ্লাস হাউজ’ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। গত ১৪ই জুলাই ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার পুলিশ টেপাখোলা এলাকা ব্যবসায়ী নিতাই সরকারের লাশ উদ্ধার করে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রথম ময়না তদন্তে স্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলা হলে নিতাই সরকারের পিতা বাদী হয়ে রাজবাড়ীর ১নং আমলী আদালতে সুনীল বিশ্বাস, যাদব বিশ্বাস, শুকচান বিশ্বাস নামের ৩জনের নামে মিস.পি-২০৭/১৮ নং মামলা দায়ের করলে আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান খাইরুল্লাহ গত ২৬শে জুলাই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্তের আদেশ দেন।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, নিহত নিতাই সরকারের সাথে একই এলাকার মাছ বিক্রেতা সুনীল সরকারের স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের জেরে প্রায় ২মাস পূর্বে নিতাই সরকার তাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। এ ঘটনায় সুনীল সরকারের সাথে নিতাই সরকারের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরিবারের লোকজনের ধারণা, সুনীল সরকারের সহায়তায় নিতাই সরকারকে হত্যা করা হতে পারে।