॥স্টাফ রিপোর্টার॥ দশ লক্ষ টাকা গাছ চুরির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গতকাল ২১শে জুন রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালত পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও কালুখালী উপজেলা কৃষক লীগের দুই নেতাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
তারা হলেন ঃ পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রোটারীয়ান দিবালোক কুন্ডু জীবন(৪৫) এবং কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি গোলাম সরোয়ার ঠান্ডু(৫৩)। তবে তাদের সাথে আদালতে আত্মসমর্পন করা অপর ৪জন আসামীর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
মামলা সুত্রে প্রকাশ, পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউপির নিভা গ্রামের ব্যবসায়ী ও ইউপি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহম্মেদ বাদী হয়ে গত ১৫/১১/২০১৭ইং তারিখে রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে দন্ড বিধির ৩২৩/৩৭৯/৫০৬(২) ধারায় মিস.পি-৩১৮/১৭ নং মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দিবালোক কুন্ডু জীবন ও গোলাম সরোয়ার ঠান্ডুসহ ঠান্ডুর ২ ছেলে সাফিন সরোয়ার তুষার(২৮) ও আকাশ মন্ডল(২০), কালুখালীর বিকয়া গ্রামের মৃত মালেক শিকদারের ছেলে কাজল(৩০) এবং কাওয়াখোলা গ্রামের লোবুর ছেলে ফারুক (৩০)কে আসামী করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আর্থিক প্রয়োজনে মাসুক আহম্মেদ গত ০৯/১০/২০১৭ইং তারিখে তার পিতা মিলন মন্ডল ও চাচা আশরাফুল মন্ডলের রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৫টি মেহগনী, ১০টি জাম ও ২টি সেগুন গাছ কেটে সেগুলো চেরাই করার জন্য কালুখালীর কুমরিরানী গ্রামস্থ দিবালোক কুন্ডু জীবনের আকিরন স’মিলে প্রেরণ করেন। ১৩/১১/২০১৭ইং তারিখে মাসুক আহম্মেদ জানতে পারেন দিবালোক কুন্ডু জীবন ও উক্ত স’মিলের পরিচালক গোলাম সরোয়ার ঠান্ডুসহ অন্যান্যরা গাছের গুড়িগুলো ট্রাক ভাড়া করে এনে পাচার করছে। তাৎক্ষণিকভাবে মাসুক আহম্মেদ এবং তার বাবা ও চাচাসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধা দিলে দিবালোক কুন্ডু জীবন মাসুক আহম্মেদকে চড়-থাপ্পড় দেয়াসহ আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে জোরপূর্বক গাছের গুড়িগুলো পাচার করে দেয়।
বিজ্ঞ আদালত মামলার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আদেশ দিলে চেয়ারম্যান আব্দুর রব বিশ্বাস তদন্ত করে ‘বাদীর দায়েরকৃত অভিযোগ সত্য’ মর্মে ১২/০৩/২০১৮ইং তারিখে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন। সি.আর মামলা নং-১৩৯/২০১৮, ধারাঃ ৩২৩/৩৭৯/৫০৬(২) দঃ বিঃ।
আদালতের সমন পেয়ে মামলার আসামীরা গতকাল ২১শে জুন রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাসিমা তালুকদার মুনমুন মামলার ১নং আসামী দিবালোক কুন্ডু জীবন ও ২নং আসামী গোলাম সরোয়ার ঠান্ডুর জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত মামলার অপর আসামী সাফিন সরোয়ার তুষার, আকাশ মন্ডল, কাজল ও ফারুকের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার বিষয়ে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিবালোক কুন্ডু জীবন বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মিথ্যা এ মামলা দায়ের করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বহিস্কৃত যুবলীগ সভাপতি গোলাম সরোয়ার ঠান্ডু বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। তিনি মামলাটিকে হয়রানীমূলক ও মিথ্যা বলে দাবী করেন।
আদালতে আসামী পক্ষে এডঃ শেখ মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ মামলাটি পরিচালনা করেন।