মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দের উজানচর ও ছোটভাকলা ইউপির ২০টি প্রকল্প পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩ জুন, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী গতকাল ২রা জুন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ও ছোটভাকলা ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা), গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর ২০টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু নাসার উদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাঈদ মন্ডল এবং উজানচর ও ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক সকালে প্রথমে উজানচর ইউনিয়নের নবুওছিমদ্দিন পাড়ার আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন পাকা রাস্তা হতে ছাত্তারের বাড়ী হয়ে জালাল মেম্বারের বাড়ী অভিমুখী রাস্তার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন।
২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)’র ২য় পর্যায়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ রাস্তা সংস্কারের কাজ গত ২৬শে এপ্রিল হতে শুরু হয়েছে এবং বর্তমানে আংশিক কাজ বাকী রয়েছে। এ রাস্তায় মসজিদের অদূরেই একটি বাড়ীর সামনে রাস্তা কর্দমাক্ত দেখতে পেয়ে সেখানে এর কারণ জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, রাস্তা সংলগ্ন বাড়ীর বর্জ্য পানি রাস্তার উপরে দিয়ে পার্শ্ববর্তী খালে যাওয়ায় রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এ সময় জেলা প্রশাসক উক্ত বাড়ী হতে পাইপ সংযোজনের মাধ্যমে বর্জ্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এ রাস্তার কয়েকটি স্থানে মাটি ধসে গেছে। ধসে যাওয়ার স্থানে নতুন করে মাটি দেয়ার জন্যও তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন। এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৯০% বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান।
উক্ত প্রকল্পটি পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক একই ইউনিয়নে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)-এর আওতায় ১ম পর্যায়ে ৩ লক্ষ ৭৬হাজার টাকা বরাদ্দে রিয়াজ উদ্দিন পাড়া বাঁধ হতে ফজলু শেখের বাড়ী অভিমুখী রাস্তার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন।
এরপর জেলা প্রশাসক একই ইউনিয়নের দক্ষিণ চর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার গর্ত ভরাট প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শনে করেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)’র আওতায় ২য় পর্যায়ে ৮মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ১০০%।
এরপর জেলা প্রশাসক একই ইউনিয়নের জৈনদ্দিন সরদারের পাড়ার সিরাজের বাড়ী সংলগ্ন পাকা রাস্তা হতে মোহাম্মদ মোল্লার বাড়ী অভিমুখী রাস্তার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)’র আওতায় ২য় পর্যায়ে ১৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ১০০% হলেও সাম্প্রতিক বর্ষণের কারণে রাস্তার কয়েকটি স্থানে মাটি ধসে গেছে। ধসে যাওয়া অংশে মাটি ভরাটের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
এ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মাল্লাপট্টি ব্রীজ সংলগ্ন বিনোদন কেন্দ্রের সাথে স্থাপিত সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করেন। ব্রীজের এক পাশের মাটি ধসে যাওতায় সেখানে জরুরী ভিত্তিতে মাটি ভরাটের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরে জেলা প্রশাসক উজানচর ইউনিয়নের নতুনপাড়ার আব্দুর বাড়ী হতে পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্প পরিদর্শন করেন। গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) কর্মসূচীর আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে ৮০ হাজার ৩১৪ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এ প্রকল্পের কাজ গত ২৬শে এপ্রিল শুরু হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ৮০% বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান।
উক্ত প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি একই ইউনিয়নের নতুনপাড়ার আক্কাসের বাড়ী হতে বাবু মৃধার বাড়ী অভিমুখী রাস্তা সংস্কার প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) কর্মসূচীর আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ১০০% হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান। নতুন মাটির এ রাস্তায় অটোরিক্সা চলাচলের কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ সময়ে তিনি সরদার এন্টারপ্রাইজের একটি অটোরিক্সাকে দাঁড় করিয়ে নতুন মাটির রাস্তায় অটোরিক্সা চলাচলে চালককে নিষেধ করেন এবং নতুন রাস্তার ক্ষতি করা হতে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
এ প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি একই ইউনিয়নের ফকিরাবাদ হায়দারের বাড়ীর পাশ থেকে নর্থ চ্যানেলের সীমানা অভিমুখী রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)-এর আওতায় ২য় পর্যায়ে ৮মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ১০০%। তবে নতুন মাটির রাস্তায় ঘোড়ার গাড়ী চলাচলের কারণে কয়েকটি স্থানে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ প্রকল্পের পাশে ফকিরাবাদ রাস্তায় গর্ত ভরাট ও পাইপ কালভার্ট স্থাপন প্রকল্প পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর আওতায় ২৯১৭-১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্পের একটি স্থানে পাইপ কালভার্ট স্থাপন করা হয়েছে। তবে কালভার্টের উপরে মাটি দ্বারা ভরাটের কাজ চলমান আছে।
উজানচর ইউনিয়নের প্রকল্পসমূহ পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক বিকেলে ছোটভাকলা ইউনিয়নের ২টি প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তিনি প্রথমে ছোটভাকলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কেউটিল কাজীপাড়া জামে মসজিদের সামনে মাটি ভরাটের কাজ পরিদর্শন করেন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১লক্ষ ৮৪হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এ প্রকল্পে ৩২ হাজার ২০০ ঘনফুট মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ১০০%। এ প্রকল্প পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীদের সাথে কথা বলেন এবং এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মুসল্লীগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এ প্রকল্প পরিদর্শনের পর তিনি একই ইউনিয়নের চর বরাট শিশু বিদ্যালয় হতে ছামাদের বাড়ী অভিমুখী রাস্তায় ইটের গাইডওয়াল নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচী (কাবিটা)’র আওতায় ২য় পর্যায়ে ৭ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ১০০%।
প্রকল্পসমূহ পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী গ্রামীণ জনপদের মানুষদের সাথে প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলেন এবং এলাকার ফসলের উৎপাদনের খোঁজ-খবর নেন। প্রকল্পসমূহের সফল বাস্তবায়নে এলাকাবাসী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং জেলা প্রশাসককে এভাবে ছুটির দিনে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় এসে প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান। উল্লেখিত প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হওয়ায় এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য স্বল্প সময়ে পরিবহন করতে পারছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!