॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৮টি বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ গতকাল শনিবার সরেজমিনে পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।
গতকাল ১৯শে মে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী সদর উপজেলার রামকান্তপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ‘গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার(কাবিটা/কাবিখা)’ এবং ‘অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান(ইজিপিপি)’ কর্মসূচীর এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম মনোয়ার হোসেন, উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিজয় কুমার প্রামানিক এবং রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বিশ্বাস, চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী ও খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহার হোসেন তকদিরসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সকালে জেলা প্রশাসক প্রথমে রামকান্তপুর ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি)’র আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত ৪নং ওয়ার্ডের কাজলের বাড়ী হতে খলিলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকায় গত ১৯শে এপ্রিল থেকে ৩৩জন হতদরিদ্র শ্রমিক দিয়ে ৪৬ হাজার ২০০ ঘনফুট মাটি দিয়ে এই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬০% কাজ শেষ হয়েছে। কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী আগামী ৯ই জুন প্রকল্পের মেয়াদকালের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
এই প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসন একই ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার(কাবিখা) কর্মসূচীর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ২য় পর্যায়ে গৃহীত বড়মুরারীপুর মহসিনের বাড়ী হতে বালিয়াকান্দি পাকা সড়ক পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের মাটির কাজ পরিদর্শন করেন। ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই রাস্তার জন্য বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণ ৪.০৯৭ মেট্রিক টন। প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ১০০%।
রামকান্তপুর ইউনিয়নের প্রকল্প ২টির কাজ পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক চন্দনী ইউনিয়নের ৪টি প্রকল্প পরিদর্শন করেন। চন্দনী ইউনিয়নে গিয়ে তিনি প্রথমে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার(কাবিখা) কর্মসূচীর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ২য় পর্যায়ে গৃহীত ঘোরপালান গ্রামের বারেকের বাড়ী হতে আফসারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ২৭০ মিটার। বরাদ্দকৃত গমের পরিমাণ ৫ হাজার মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে ৩টি লীডে ৮৮৭ ঘনমিটার মাটির কাজ করা হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ১০০%।
এরপর তিনি একই ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি)’র আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত চন্দনী দত্তপাড়া কবরস্থান হতে কেয়ারের রাস্তা পর্যন্ত ও আজুগাড়া মসজিদের মাঠ ভরাট এবং কালভার্ট স্থাপন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।
এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২লক্ষ ৮০হাজার টাকা। ৩৫জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্পে ৪৯ হাজার ঘনফুট মাটি দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি ৬০%। এরপর জেলা প্রশাসক একই ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচীর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ১ম পর্যায়ে গৃহীত চাঁদপুর হাইওয়ে হতে রায়পুর রাস্তা পর্যন্ত সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা। ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ রাস্তার কাজের অগ্রগতি ১০০%।
এ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক একই ইউনিয়নের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী(ইজিপিপি)’র আওতায় ২০১৭-০১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত চাঁদপুর হাবু মাস্টারের বাড়ী হতে তাইজেলের বাড়ী পর্যন্ত এবং রতনের বাড়ী হতে জোকাই অভিমুখী রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ৩৫ জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
চন্দনী ইউনিয়নের প্রকল্পসমূহ পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক খানগঞ্জ ইউনিয়নের ২টি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন। প্রথমে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি)’র আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত বাসুদেবপুর আমজাদ হোসেন বকুর চাতাল হতে বিমলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২লক্ষ ২৪হাজার টাকা। ২৮জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্পের মাটির কাজ করানো হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি ৬০%। এরপর তিনি ঘুঘুশাইল গ্রামের মহিদ মেম্বারের বাড়ী হতে জাফরের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। ২৪জন শ্রমিক এই প্রকল্পে মাটির কাজ করছেন।
প্রকল্পগুলো পরিদর্শনকালে তিনি প্রকল্পস্থানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন এবং তারা সঠিকভাবে মজুরী পাচ্ছে কি না সে সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। সর্বশেষ প্রকল্প পরিদর্শনকালে বাসুদেবপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন বকুর চাতালের নিকট হড়াই নদীর পাশে একটি কালভার্ট স্থাপনের জন্য এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের নিকট দাবী জানান। তিনি স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং তিন ফুট ডায়া বিশিষ্ট তিন ভেন রিং কালভার্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন।