॥রফিকুল ইসলাম॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন(পশ্চিমাঞ্চল) আওয়ামী লীগের আয়োজনে গতকাল ৬ই এপ্রিল বিকালে সূর্যনগর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এক কর্মি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অসীম কুমার পাল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাওন মোঃ কহিনূর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজু, মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিন উদ্দিন আহম্মেদ টুকু।
মিজানপুর ইউনিয়ন(পশ্চিমাঞ্চল) আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রদীপ কুমার করের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফিরোজ বিশ্বাসের সঞ্চালনায় কর্মি সভায় অন্যান্যের মধ্যে মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ আজম মন্ডল, মিজানপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পারুল বেগম, মিজানপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ বাবু মোল্লা, মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মোস্তফা, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার আলী, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অরূপ দত্ত হলি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, ড.এম.এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের রাজবাড়ী জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল লতিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান মিঠু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রুবেল, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুর রহমান জয় ও মিজানপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা লুৎফুন নাহার মিতা, মিজানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রুবেল মন্ডল, চন্দনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, দলিল লেখক আজিজুল হক মৃধা ও আলাউদ্দিনসহ মিজানপুর ইউনিয়ন (পশ্চিমাঞ্চল) আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী বলেন, আমরা সবাই মিলে আওয়ামী লীগ পরিবার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পরিবারের সৃষ্টি করেছেন। আমাদের দেশের যা কিছু অর্জন সবই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনীদেরকে শুধু রক্ষা করাই নয়, বিদেশের দূতাবাসগুলোতে উচ্চ পদে চাকুরী দিয়েছিল। স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী কুখ্যাত জামায়াত নেতাদের মন্ত্রী সভায় স্থান দিয়েছিলেন। বিএনপি আর জামায়াত একই সূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তারা একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে খুন, গুম, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, নির্যাতন করেছিল। এই সূর্যনগরেও আওয়ামী লীগ নেতা বক্কার মন্ডলকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময়ে মানুষ শান্তিতে থাকে। দেশের উন্নয়ন হয়। কাজেই দেশের চলমান অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হলে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। কোন ভাবে যদি বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাতা থেমে যাবে। দেশ জঙ্গীরাষ্ট্রে পরিণত হবে। কেউ আর শান্তিতে থাকতে পারবে না। তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে দেশের স্বার্থে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। তিনি সবসময় মিজানপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিন উদ্দিন আহম্মেদ টুকু বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এই ইউনিয়নের নেতৃত্বে থাকলেও সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা পাই না। নেতাকর্মীদের জন্য যা করি তা কাজী ইরাদত আলীর ব্যক্তিগত সহযোগিতায় করা হয়। আমাদের এলাকায় প্রতিমন্ত্রী ২বার এসেছেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি একবারও জানতে পারিনি। একটানা ৯বছরের অধিক সময় দল ক্ষমতায় থাকলেও মিজানপুরের মানুষের জন্য সরকারীভাবে আমরা কিছু করার সুযোগ পেলাম না। আমরা কোন কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশা না করলেও জনগইতো কিছু আশা করে। তাদের জন্য আমাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
তিনি প্রকৃত আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে রাজনীতি করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা যার যার অবস্থান থেকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, মানুষ ভালো থাকে-এ জন্য নিজেদের প্রয়োজনেই আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে নৌকার বিজয়ের জন্য সচেষ্ট থাকবো।
এছাড়াও কর্মি সভায় কয়েকজন নেতা তাদের বক্তব্যে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।