শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

ভ্রাম্যমান মৌ চাষ করে রাজবাড়ীতে দুই কলেজ শিক্ষার্থী এখন স্বাবলম্বী

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

॥এম.দেলোয়ার হোসেন॥ রাজবাড়ী সরকারী কলেজের অনার্সের ছাত্র সজল হোসেন এবং আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এরা দু’জনেই বাড়ী সদর উপজেলার বেনী নগর ও গোপিনাথপুর গ্রামের বসিন্দা।
সজল এবং মাসুদ দু’জনে সহপাঠি এবং বন্ধু। আগে এদের সংসারে খুব একটা স্বচ্ছলতা ছিল না। পড়াশুনার যোগান দিতে তাদের অভিভাবকদের হিমসিম খেতে হতো। সংসারে ছিল টানপোড়ন।
একদিন তারা জানতে পারে যে রাজবাড়ী বিসিকে ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র মৌ চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তখন সজল এবং মাসুদ একমত হয়ে বিসিকের মৌ চাষ প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করে। প্রশিক্ষন শেষে তাদের একটি করে মৌ চাষের বক্স(বাক্স) দেয়া হয়।
প্রথমে তারা পরীক্ষামূলক ভাবে বাড়ীতে মৌ চাষ শুরু করে। বিষয়টি তাদের আয়ত্বে এসে গেলে তারা মৌ বক্স বৃদ্ধি করে বানিজ্যিক ভাবে মৌ চাষ শুরু করে।
বর্তমানে তারা ৭০টি মৌ বক্স নিয়ে মৌ চাষ করছে। তাদের দুইতলা বিশিষ্ট প্রতিটি বক্সে রয়েছে মৌচাক বানানোর জন্য ১০টি করে ফ্রেম। অর্থাৎ ১০টি করে মৌচাক। মৌচাক গুলো একবার তৈরি করতে হয়। এই মৌচাক গুলোতে মৌমাছি মধু তৈরী করে।
চাক মধুতে পূর্ণ হলে চাক থেকে মাছি সরিয়ে মধু সংগ্রহের পর চাকগুলো পুনরায় বক্সে রেখে দিতে হয়। মৌমাছি ঐ চাকেই আবার মধু তৈরী করে। পুনরায় চাক বানানোর প্রয়োজন হয় না। এ ভাবেই তারা তাদের বক্সগুলো নিয়ে ভ্রাম্যমান মৌ কারখানা গড়ে তুলেছে।
যেখানে ফুলের সমাগম বেশী তারা সেখানেই তাদের বক্সগুলো স্থাপন করে মৌমাছি দ্বারা মধু উৎপাদন শুরু করে।
বর্তমানে তারা জেলার কালুখালী উপজেলার মুরারীপুর গ্রামে পদ্মার শাখা নদীর পাড়ে শরিষা, কালিজিরা ও খেসারী ক্ষেতের পাশে ভ্রাম্যমান মৌ কারখানার(মৌবক্স বসিয়ে) মাধ্যমে মধু আহোরন করে চলেছে।
প্রতি সপ্তাহে এদের উৎপাদিত মধুর পরিমান ৩ থেকে ৪ মন।যার মূল্য ১২ থেকে ১৬হাজার টাকা। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৪শত টাকা।
সজল জানায়, তাদের মধু সম্পূর্ণভাবে প্রাকৃতিকভাবে ফুল থেকে মাছি রস নিয়ে এসে মধু তৈরী করে। তৈরীকৃত মধু মেশিনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। এতে হাতের কোন ষ্পর্শ লাগে না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভেজাল ঘাটি মধু।
তাদের উৎপাদিত মধু প্রচুর সুনাম থাকায়, এখন আর তাদের মধু নিয়ে বাজারে যেতে হয়না। দোকানীরাই(পাইকার) এখন তাদের ভ্রাম্যমান কারখানা খুঁজে সেখান থেকে মধু নিয়ে যায়।
সজল জানায়, এই জানুয়ারী মাসে সে সকল প্রকার খরচ বাদ দিয়ে ৫০হাজার টাকা লাভ করেছে। এখন সে স্বাবলম্বী। সে নিজের খরচ চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছে। তাদের আগের সেই অভাব এখন আর নেই।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানায়, গত নভেম্বর-ডিসেম্বর এবং জানুয়ারী এই ৩মাসে তার ১লাখ ৫০হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এটা একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যাবসা বছরে ৬মাস চলে। এ ব্যবসা করে লেখা পড়া করা যায় কোন অসুবিধা হয় না। আমি এখন স্বাবলম্বী।
সে আরো জানায়, যে সকল যুবক বেকার আছে হতাশায় ভুগছে তারা যদি এভাবে এই মধু চাষে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসে তা হলে তারাও লাভবান হবে এবং বেকার সমস্যা কমে যাবে।
তবে এবারে বৃষ্টি, কুয়াশা এবং শীতের কারণে মধু তুলনামুলক ভাবে কম উৎপাদন হয়েছে। কারণ কুয়াশা ও বৃষ্টির মধ্যে মৌমাছি বক্স থেকে বের হয় না এবং ফুলের রস আনতে পারে না। বৃষ্টি কুয়াশা না থাকলে মধুর উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পেত।
রাজবাড়ী বিসিক শিল্প নগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাক মোঃ ফরহাদ হোসেন জানান, প্রতি বছরই আমরা মৌ চাষের উপর আমরা প্রশিক্ষণ দেই। আমাদের এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজবাড়ী সরকারী কলেজের ২টি ছাত্র খুব ভাল ভাবে মৌচাষ করছে এবং তারা লাভবানও হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!