॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ আজ ১লা ফেব্রুয়ারী থেকে রাজবাড়ীতে ৩দিনব্যাপী ইজতেমা শুরু হচ্ছে। সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়নপুর মৌজার(কামালদিয়ার পাশে) রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্ব পাশে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের(টিটিসি’র) বিপরীতে প্রথমবারের মতো ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে।
আজ ১লা ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ ইজতেমায় আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা ও ৩রা ফেব্রুয়ারী শনিবার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শেষ হবে। এই ইজতেমায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা। ইজতেমা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ।
জেলা ইজতেমা কমিটির আহালেসুরা ফয়সাল(সিদ্ধান্তকারী) জানান, তুরাগ নদীর তীরে স্থান সংঙ্কুলান না হওয়ার কারণে বিশ্ব ইজতেমা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ারী এই ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে। ইজতেমার সকল কাজ ইতিমধ্যেই প্রায় শেষ হয়েছে। ৩রা ফেব্রুয়ারী শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে দোয়া এবং মোনাজাত পরিচালনার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে ইজতেমা কমিটির।
ইজতেমায় যা যা থাকছে ঃ ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের জন্য ২টি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আলীপুর টিটিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে দিয়ে প্রধান পথ এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের খানখানাপুর ব্রিজ দিয়ে পাঁচুরিয়া কামালদিয়া সড়ক হয়ে দ্বিতীয় রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করা যাবে। ৪লক্ষ ৫৫হাজার বর্গফুট অর্থাৎ ২২ একর জমির উপর নামাজের জন্য ২৪৪টি কাতারের ব্যবস্থা থাকবে। পুরো ইজতেমা ময়দানের ৬২০টি টয়লেট, ২৫০টি প্রস্রাবখানা, ৩টি পুকুর ও ২৫০০ ওজুখানা মুসল্লীরা ব্যবহার করবে। পর্যাপ্ত আলোর জন্য ইজতেমা মাঠে ১২শত বাতি থাকবে। রয়েছে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থাও। ইজতেমা ময়দানে পানি সরবরাহের জন্য ১৫টি পাম্প এবং ১৫টি টিউবয়েলের ব্যবস্থা করেছে ইজতেমা কমিটি। আরো ১০টি টিউবয়েল বসানোর চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। তবে ইজতেমা ময়দানে বৃষ্টি হলে তার জন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
ইজতেমা ময়দানে ইমামতি করবেন রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দার মারকাজ মসজিদের ইমান মাওলানা এমদাদুল্লাহ। ইজতেমা ময়দানের উত্তর-দক্ষিণ প্রান্তের মাঝে উচুঁ একটি মঞ্চে বসবেন বক্তারা। সেখান থেকে ৮৫টি মাইকের মাধ্যমে শোনা যাবে বয়ান।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স জানায়, রাজবাড়ীতে ৩দিনব্যাপী ইজতেমায় একটি মেডিকেল টিম সর্বদা নিয়োজিত থাকবে। যারা ৩টি স্তরে সেবা প্রদান করবে।
গত ২৯শে জানুয়ারী রাত সাড়ে ৭টায় ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, রাজবাড়ীতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য ইজতেমায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদানসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার করা হবে। মুসল্লীদের যাতে কোন দুর্ভোগ না পোহাতে হয় সেজন্য এখানে সার্বক্ষনিকভাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুল রহমান থাকবে।
ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা বলেন, রাজবাড়ীতে এবারই প্রথমবারের মতো ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ইজতেমা কমিটির সাথে জেলা পুলিশের একটি সভা হয়েছে। তাদের সাথে সমন্বয় করে ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তার স্বার্থে জেলা পুলিশ কাজ করবে। প্রতিদিন ৭০ হাজার করে এবং আখেরী মোনাজাতের দিন ২লক্ষ মুসল্লীর জমায়েতের কথা চিন্তা করে নিরাপত্তা রক্ষায় ৪শত পুলিশ কাজ করবে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি আর্মড পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশসহ রেঞ্জ থেকে পুলিশ এনে ইজতেমা ময়াদানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা হবে।