বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ীতে র‌্যালী ও আলোচনা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৮

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে ‘নারী পুরুষ নির্বিশেষে, সমাজসেবায় গড়ব দেশ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহের সহযোগিতায় গতকাল ২রা জানুয়ারী সকালে বর্নাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম্রকানন চত্বর থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর নেতৃত্বে বর্নাঢ্য র‌্যালীটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাপ্ত হয়। র‌্যালী শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মেজবাউল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামান। আরো বক্তব্য রাখেন এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ড.একেএম আজাদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাজিনুর রহমান, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌসসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তাগণ এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারী শিশু সদন ও বিভিন্ন এতিমখানার নিবাসীরা র‌্যালী ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সকলকে ধর্মভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। যে শিক্ষা আমাদেরকে বেকার হিসেবে গড়ে তোলে সেই শিক্ষাকে পরিহার করে মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ১৯৬১ সালের একটি আইনের মাধ্যমে সামজসেবা কার্যক্রমের কথা বলা হলেও মূলত বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করেন। আজ থেকে ২২/২২ বছর আগেও এদেশের সাধারণ মানুষ জানত না সামজসেবা বিভাগ নামে সরকারের একটি বিভাগ আছে। বর্তমান সরকার সমাজসেবার মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদানের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এই ধরনের সমাজসেবা ভিত্তিক কার্যক্রম একমাত্র উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশ যেহেতু একটি উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে সেই জন্য বর্তমান সরকার এ বছর তার ৪লক্ষ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে ৬৬হাজার কোটি টাকা শুধু সামজসেবার লক্ষ্যে বরাদ্দ দিয়েছে। যাতে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়। তবে সরকারের এই ভাতার যেমন সুফল রয়েছে তেমনি কুফলও রয়েছে। এই ভাতাপ্রাপ্তরা অনেক ক্ষেত্রেই অধিক সরকারী সুবিধা ভোগের লক্ষ্যে অনেক ক্ষেত্রে তাদের নৈতিকতা বা সততা পরিহার করে অসৎভাবে দ্বৈতভাতা গ্রহণ করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে যাদের দ্বারা ভাতা প্রদান করা হয় তারা নিজেরাও অনেক সময় এই ভাতা বা সরকারী অনুদানের অর্থকে নিজের অর্থ মনে করে পকেটে ভরে। এর থেকে সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি কেউই মুক্ত নয়। সুতরাং আমরা যতক্ষণ নিজেদের নৈতিকতার পরিবর্তন না ঘটিয়ে নিজেরা সততার সাথে দেশের উন্নয়নে কাজ না করব ততক্ষণ দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আবার দেশের অনেক এনজিও সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সাথে কাজ করে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এনজিওগুলো গরীব জেলাগুলোতে কাজ না করে ঢাকার আশেপাশে তাদের কাজ করে। যাতে বিদেশী দাতা সংস্থাগুলো আসলে সহজেই তাদেরকে কার্যক্রম দেখিয়ে আরো ফান্ড আনা যায়। অথচ ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোর তুলনায় অনেক জেলা আছে যেখানকার মানুষদের জন্য এনজিওদের আরো বেশী কিছু করার আছে। ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে আমার জানা মতে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন(পিকেএসএফ) বিভিন্ন এনজিওকে অনেক কম সুদে ঋণ প্রদান করে থাকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য। কিন্ত পিকেএসএফ কম সুদে ঋণ দিলেও সাধারণ জনগণ কম সুদে টাকা পায় না। তাদেরকে উচ্চ হারে সুদ দিয়ে এনজিওগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিতে হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই এনজিওগুলোকে দেশের গরীব জেলাগুলো যেখানে সাধারণ জনগণ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল সেসব জেলাতে গিয়ে কাজ করতে হবে।
জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে আরো বলেন, রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশের মধ্যে কৃষিনির্ভর ও অর্থনৈতিকভাবে মধ্যম মাপের একটি জেলা। যেখানে উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু করার আছে। সেই লক্ষ্যে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এই জেলায় বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি এ জেলায় প্রায় পঞ্চাশ হাজারের বেশী সাধারণ মানুষকে বয়স্ক, বিধবা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার সাথে সরকারী ভাতা প্রদান করে যাচ্ছে। এছাড়াও বন্যা, নদী ভাঙ্গন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সরকারী ভাতা বর্তমানে প্রদান করা হচ্ছে সেগুলো অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে জেলা প্রশাসনের সঠিক তদারকিতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ অনেক উপকৃত হচ্ছে। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন কোন এতিমখানার জন্য কোন প্রকার সহযোগিতার প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হবে। তিনি জেলাবাসীকে এ জেলার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!