Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

২০১৮ সালের জুনের মধ্যে পাংশার শতভাগ বাড়ীতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে — রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম

॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউপির পেপুলবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গতকাল ২২শে নভেম্বর সন্ধ্যায় পেপুলবাড়ীয়া, জাগির মালঞ্চি, চৌড়াপাড়া ও ধুলিয়াট ৪টি গ্রামের পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য, বেসরকারী সদস্যদের বিল এবং বেসরকারী সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বিদ্যুতের সুইচ টিপে বাতি জ্বালিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন। এই উদ্বোধনের ফলে পেপুলবাড়ীয়া, জাগির মালঞ্চি, চৌড়াপাড়া ও ধুলিয়াট ৪টি গ্রামের ৬৭২টি পরিবার পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পেলেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, আগামী ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে পাংশার শতভাগ বাড়ীতে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কালুখালীর শতভাগ বাড়ীতে এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলার শতভাগ বাড়ীতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। কোনো বাড়ী বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় থাকবে না। বিদ্যুৎ বিহীন এলাকায় যাতে দ্রুত বিদ্যুতের লাইন দেওয়া যায় আমরা তার জন্য কাজ করছি।
তিনি বলেন, কোনো এলাকায় বিদ্যুত পাওয়া মানেই সেই এলাকার মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও উন্নয়ন বৃদ্ধি হওয়া। এখানে বিদ্যুতের উদ্বোধনের ফলে অত্র এলাকার মানুষের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো।
এমপি জিল্লুল হাকিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মানেই উন্নয়নের সরকার। বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। শিক্ষা উপবৃত্তি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, ভিক্ষুকদের জন্য ঘর নির্মানসহ দরিদ্র মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বর্তমান সরকার নানামুখী কর্মসূচী চালু করেছেন। এর সুফল মানুষ ভোগ করছে।
এমপি জিল্লুল হাকিম আরো বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে এলাকার কোনো উন্নয়ন হয় নাই। কোথাও বিদ্যুতের একটি খুঁটিও গাড়া হয় নাই। তখন সারের জন্য কৃষক গুলি খেয়ে মরেছে। সার সংকটের কারণে কৃষক সার পায় নাই। সারের দামও ছিল বেশী। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজীর কারণে মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। কৃষক পর্যাপ্ত সার পাচ্ছে এবং সারের দামও খুব বেশী না। কৃষকরা যাতে ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারে সে জন্য কৃষকের মাঝে উন্নত বীজ দেওয়া হচ্ছে। মানুষ এখন সুখে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন, রাস্তাঘাট, ব্রিজ নির্মান হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই এলাকায় এতো উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। এমপি জিল্লুল হাকিম বলেন, আপনাদের কাজ ভোট দেওয়া। আপনারা একদিন একটি করে ভোট দিবেন আর আমরা ৫বছর ধরে আপনাদের সেবা করব, এলাকার উন্নয়নে কাজ করব। মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য আমরা কাজ করব। শেখ হাসিনা যাতে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হয়ে এলাকার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পারেন তার জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রদানের আহবান জানান তিনি।
মৌরাট ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী সরদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম গোলদার, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ এ.কে.এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাংশা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হাসান আলী বিশ্বাস, পাংশা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পাংশা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওদুদ সরদার, মৌরাট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান, মৌরাট ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী সরদার ও মৌরট ইউপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কেছমত আলী শেখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জাননো হয়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সবুজ মুন্সী। অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পেপুলবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উদ্বোধন হওয়া পেপুলবাড়ীয়া, জাগির মালঞ্চি, চৌড়াপাড়া ও ধুলিয়াট ৪টি গ্রামের ৫.৮২৯ কিলোমিটার নতুন নির্মিত বৈদ্যুতিক লাইনের ব্যয় হয়েছে ৮৭লাখ ৪৩হাজার ৫শত টাকা। এর মধ্যে ৫ কেভিএ ৩টি, ১০ কেভিএ ৭টি ও ১৫ কেভিএ ৫টি মোট ১৫টি ট্রান্সফরমার রয়েছে। পাংশা উপজেলায় মোট নির্মিত লাইনের পরিমান ৭৬০.৭৮৭ কিলোমিটার। পাংশা উপজেলায় মোট গ্রাহক সংখ্যা ৩৫ হাজার ৬৯১জন এবং মোট বিদ্যুতায়িত গ্রামের সংখ্যা ১৬৭টি।