॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউপিতে নবনির্মিত ১০শয্যা বিশিষ্ট কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের গতকাল ২০শে নভেম্বর বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।
ফিতা কেটে ও নামফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন উদ্বোধক রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য, বেসরকারী সদস্যদের বিল এবং বেসরকারী সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এবং প্রধান অতিথি ঢাকাস্থ ডিডিসি লিমিটেড’র ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, কলিমহর জহুরুন্নেছা শিক্ষা নগরীর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিন।
পাংশা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার খোন্দকার সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডিডিসি লিমিটেড’র ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কলিমহর জহুরুন্নেছা শিক্ষা নগরীর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিন বলেন, কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতি মায়েরা পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস ব্যক্ত করে নবনির্মিত কেন্দ্রটিকে আদর্শ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তৃণমূল মানুষ তার প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। ১০ শয্যা বিশিষ্ট কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ার একেএম রফিক উদ্দিনের অবদানের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, অনেকেরই বিপুল টাকা আছে কিন্তু মন নেই। মানুষের কল্যাণে কাজ করার আগ্রহ নেই। কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দিক নির্দেশনা প্রদান করে এমপি জিল্লুল হাকিম বলেন, যথাযথভাবে চিকিৎসা পেলে অত্র এলাকায় মাতৃমৃত্যু হার ও শিশু মৃত্যু হার কমে যাবে।
তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে পাংশা উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। বিদ্যুতায়নের ফলে এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হয়। এলাকার রাস্তঘাট, ব্রিজ-কার্লভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়নসহ দরিদ্র মহিলাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এলাকার সার্বিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য উপস্থিত সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ডিডিসি লিমিটেড’র পরিচালক নিলুফার রফিক, রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বকস, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ, রাজবাড়ীর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সদ্য বিদায়ী উপ-পরিচালক কাজী ফারুখ আহম্মেদ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাংশা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হাসান আলী বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ীর পরিবার পরিকল্প অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ এএফএম শফীউদ্দিন পাতা।
অনুষ্ঠানে পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম, কসবামাজাইল ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান খান, পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর বাদশা, পাংশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও কলিমহর ইউপি আওয়ামী লীগের আহবায়ক চাঁদ আলী খান, কলিমহর ইউপি আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব আব্দুল গফুর মাস্টার, কলিমহর ইউপির প্রাক্তণ চেয়ারম্যান ও পাংশা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রোকন উদ্দিন বিশ্বাস বকুল, কলিমহর ইউপি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোঃ আমিরুল ইসলাম মিয়া, কসবামাজাইল ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দার, কলিমহর ইউপি কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন, ডিডিসি লিমিটেড’র স্থানীয় কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দে ও উত্তম রায়সহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পৌঁছিলে কলিমহর ইউপি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এমপি জিল্লুল হাকিমকে ফুলেল অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর গেটে ফিতা কেটে কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র উদ্বোধনের পর কলিমহর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নবনির্মিত ভবনে পৌঁছিলে স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে অতিথিবৃন্দকে বরণ করে। এ সময় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। আলোচনা সভায় মঞ্চে অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।