Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় ২৫শে নভেম্বর রাজবাড়ীতে আনন্দ শোভাযাত্রা

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরী অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও আনন্দ উৎসব ও শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৬ই নভেম্বর বেলা ১২টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. এ.কে.এম আজাদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আলীমুর রেজা, রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল হামিদ, ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাইদা খানম, কাজী হেদায়েত হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মীর মাহফুজা খাতুন মলি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল হামিদ খান, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহ্রাব, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকগণ এবং এনজিও প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. এ.কে.এম আজাদুর রহমানসহ অন্যান্য বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন ব্যক্তি যার এক কথায় হাজার হাজার বাঙালী মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের প্রাণ যাওয়ার কথা জেনেও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ১৮মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষণই এদেশের মানুষকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে মনোবল যুগিয়েছিল। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ভাষণটি ছিল এমনই একটি ভাষণ যার মাধ্যমে স্বাধীনতার আগ মুহুর্ত থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করাসহ স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কি কি করতে হবে তার সবকিছুরই উল্লেখ ছিল। আজকের প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তারা বঙ্গবন্ধুর এই ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে আজও উপলব্ধি করতে পারে সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের কাছে কত আপনজন ছিলেন। শুধু সেটাই নয়, বঙ্গবন্ধুর এই ৭ই মার্চের ভাষণ আজ পর্যন্ত সব বাঙালীসহ বিশ্বের বিবেকবান প্রতিটি মানুষের অন্তর ছুঁয়ে যায়। যার কারণে স্বাধীনতার ৪৭বছর পরে হলেও আজ বিশ্ব সংস্থার ইতিহাসের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাণনকে ‘মেমোরী অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি প্রদান করেছে। জাতির জনকের এই ভাষণের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আমরা বাঙালী জাতি হিসেবে গর্ববোধ করি এই ভেবে যে, বঙ্গবন্ধুর মতো এমন একজন বিশ্বনেতা আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। সেই জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরী অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পওয়ায় সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতে আগামী ২৫শে নভেম্বর আনন্দ উৎসব ও বর্নাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। এই দিনটিতে অন্যান্য দিবসে যে শোভাযাত্রা পালন করা হয় তার থেকে অনেক বড় ও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের আম্রকানন চত্বর থেকে বিশাল ও বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। এছাড়াও বিকালে পথ নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শোনানো ও এর উপর চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সভা থেকে উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য রাজবাড়ীবাসীকে আহ্বান জানানো হয়।