Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীর বসন্তপুরে জিল্লু মামলার তদারকিতে এসপি সালমা বেগম॥হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে পুলিশ কাজ করছে

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের ধুলদী লক্ষ্মীপুর গ্রামে ১১দিনের ব্যবধানে জামাই-শ্বশুরের ২টি লাশ উদ্ধারের পর মামলার তদারকিতে গতকাল ১লা অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার সালমা বেগম নিহতদের পরিবারকে শান্তনা প্রদান করেন। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের এই অপূরণীয় ক্ষতি পূরণ করার ক্ষমতা হয়তো জেলা পুলিশের নেই কিন্তু হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য বিচারের মুখোমুখি করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলার পর পুলিশ সুপার ধুলদী লক্ষ্মীপুর গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসী ও গণমান্য ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেন, পুলিশ এই হত্যাকন্ডের রহস্য উন্মোচন করতে বদ্ধপরিকর। যতদূর শোনা যাচ্ছে, কলা ব্যবসায়ী জিল্লু শেখ ভাল মানুষ ছিলেন। তবে কি কারণে এই হত্যা হতে পারে সে সম্পর্কে আপনাদের কাছে যদি কোন তথ্য থাকে তাহলে আমাকে ফোন করে জানাবেন। আপনাদের নাম-ঠিকানা কিছুই জানতে চাইবো না। সমস্ত দিক মাথায় রেখে হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শুধু এই অপরাধই নয়-যেকোন অপরাধের ব্যাপারে আপনারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন। এ সময় তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে তার মোবাইল নম্বর সম্বলিত কার্ড বিরতণ করেন। বক্তব্যের শেষে তিনি হত্যাকান্ড সম্পর্কে কারো কিছু জানা থাকলে তা বলতে বলেন।
এ সময় বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, ঘটনা ঘটার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং তারা তৎপর রয়েছে। রাজবাড়ী সদর থানা এবং খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে সুলতানপুর এবং বসন্তপুর অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় তিনি সেখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, এ ব্যাপারে আইন মেনে কাজ করতে হবে। যদি আইনের মাধ্যমে সম্ভব হয় তবে অব্যশই এখানে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।
বসন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মিয়াও পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের উপর গুরুত্ব দেন।
বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা বদিউজ্জামান বাবু বলেন, জিল্লু হত্যা এবং সোবাহান শেখের গলায় ফাঁস দেওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। পুলিশের সাথে থেকে আইনগত সহায়তা করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিও বসন্তপুরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, অপরাধ নির্মূলে যা যা করণীয় জেলা পুলিশ তা করবে। আপনারা আতংকিত হবেন না। পুলিশ তৎপর রয়েছে। আপনাদের সাথেই রয়েছে। তিনি স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কমিটি করে পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়াও বাল্য বিবাহ, ইভটিজিংসহ অনান্য অপরাধ দমনে সামাজিক সচেতনার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এ সময় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ তারিক কামাল, পরিদর্শক(তদন্ত) মোঃ কামাল হোসেন ভুঁইয়া এবং খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি ইন্সপেক্টর আবুল কালাম ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ই অক্টোম্বর বসন্তপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে বাড়ীর পাশের একটি মরিচ ক্ষেত থেকে কলা ব্যবসায়ী জিল্লু শেখের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ১১দিন পর একই গ্রামের একটি আমবাগান থেকে নিহত জিল্লুর শ্বশুর সোবাহান শেখের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ২টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় পৃথক ২টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
সদর থানার এস.আই রঞ্জন কুমার বিশ্বাস মামলা ২টি তদন্ত করছেন। জিল্লু হত্যা মামলায় পুলিশ হিরু শেখ নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। রিমান্ড শেষে সে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।