॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলায় যোগদানের পর থেকে গত ৫মাসে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকান্ড মাধ্যমে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ তৎপরতায় সর্বত্র সরব উপস্থিতির মাধ্যমে তিনি জনসেবক জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচিতি ও প্রশংসা পেয়েছেন। এ সকল কার্যক্রমের পাশাপশি তিনি নিজ কার্যালয়ে সাপ্তাহিক গণশুনানীর মাধ্যম মানুষের সমস্যার প্রতিকার করেন।
গতকাল ১৩ই সেপ্টেম্বর তার অফিস কক্ষে সাপ্তাহিক গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানীকালে তিনি ধৈর্য্য সহকারে আগত সেবা গ্রহীতাদের বক্তব্য শোনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিকারের জন্য অনুরোধ জানান।
গণশুনানীতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মাধব লক্ষ্মীকোল এলাকা থেকে রেপাত ঋষির পুত্র দুর্ঘটনায় আহত রাখাল ঋষি এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শুনে স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে ১হাজার টাকা প্রদান করেন।
রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর মারোয়ারীপট্টির মরহুম সিরাজুল ইসলামের পুত্র আতাউর খান এসেছিলেন পৈত্রিক সম্পত্তির ওয়ারেশী স্বত্বে বাটোয়ারার আবেদন নিয়ে। তিনি একই বিষয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করায় তাকে সেখানেই প্রতিকার চাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক পরামর্শ প্রদান করেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুনচী নিবাসী অসুস্থ্য কাদের বেপারীর স্ত্রী ছালেহা খাতুন এসেছিলেন আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শুনে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর বয়স্ক ভাতার আওতায় তাকে অথবা তার স্বামীকে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদনপত্রটি প্রেরণ করেন।
সদর উপজেলার ভবদিয়া পাকুরিয়ার মরহুম কোরবান খাঁর পুত্র মোঃ কালাম খাঁ এসেছিলেন বসতঘর তৈরীর জন্য টেউটিন প্রাপ্তির আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট হতে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে তার বরাবর প্রেরণ করেন।
সদর উপজেলার পাঁচুরিয়ার মরহুম মুনছুর আলী ভুঁইয়ার প্রতিবন্ধী সন্তান মেহেদী আবুল কালাম ভুঁইয়া এসেছিলেন পেনশন ভোগরত তার পিতা ও মাতার মৃত্যুর পর প্রতিবন্ধী সন্তান হিসেবে পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তির আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শোনেন এবং বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য আবেদনপত্রটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) এর নিকট প্রেরণ করেন।
রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি দুলাল কর্মকার এসেছিলেন মন্দিরের অবকাঠামো সংস্কারের আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শুনে আবেদনপত্রটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)-এর নিকট প্রেরণ করেন।
রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর নিবাসী আঃ রহমানের কন্যা শিরিন আক্তার এসেছিলেন আর্থিক সাহায্যের আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার আবেদনপত্রটি জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের নিকট প্রেরণ করেন।
সদর উপজেলার ভবাণীপুর নিবাসী আমজাদ হোসেনের পুত্র আঃ ছালাম এসেছিলেন অসুস্থতাজনিত কারণে আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে। কিন্তু তার নিকট চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র না থাকায় ব্যবস্থাপত্রসহ আবেদন করার জন্য জেলা প্রশাসক তাকে পরামর্শ প্রদান করেন।
সদর উপজেলার কাঁচরন্দের মরহুম আইনদ্দিন মন্ডলের পুত্র শওকত মন্ডল এসেছিলেন আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শুনে তাকে স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে ১হাজার টাকা প্রদান করেন।
গণশুনানী গ্রহণের পূর্বে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তির বিষয়ে ২টি আবেদনের শুনানী গ্রহণ করেন। ইসলামী ব্যাংক, পাংশা উপজেলা শাখার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদনের শুনানী শেষে তিনি পুলিশ সুপার, জেলা বিশেষ শাখা, রাজবাড়ীর তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আবেদনপত্রটি জেলা বিশেষ শাখায় প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এছাড়া বালিয়াকান্দি উপজেলার মরহুম কমির উদ্দিন মন্ডলের পুত্র আঃ খালেক তার আগ্নেয়াস্ত্র শারীরিক অক্ষমতা জনিত কারণে তার ছেলের নামে নবায়নের আবেদন জানালে জেলা প্রশাসক তার বক্তব্য শোনেন এবং তাকে সিভিল সার্জনের নিকট থেকে শারীরিক অক্ষমতা জনিত প্রত্যয়নপত্রসহ আবেদন করার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ই মে-২০১৭ তারিখে যোগদানের পর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী কর্তৃক সপ্তাহের প্রতি বুধবার গণশুনানী গ্রহণ করায় সেবা গ্রহীতারা তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়ায় উপকৃত হচ্ছেন।