॥মইনুল হক মৃধা॥ জ্যৈষ্ঠ মাস মধু মাস, ফলের মাস। গ্রীষ্মের ভরপুর ফলের মৌসুমে গোয়ালন্দে বিভিন্ন স্থানে পিপসাকাতর মানুষদের ব্যাপক চাহিদা হয়ে ওঠছে মৌসুমী ফল তালের শাস।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজবাড়ী জেলাসহ সারা দেশে পড়ছে প্রচন্ড তাপদাহ। আর এই প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন হয়ে ওঠেছে বিপর্যস্থ ও দুর্বিষহ। তাপদাহের প্রচন্ড এই গরমে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল হিসেবে পরিচিত তালের শাসের বেচাকেনা। করোনায় অনেক বেকার যুবকের এই তালের ব্যবসা করে বাড়তি আয়েরও পথ খুজছেন অনেকে।
ফলের জন্য বিখ্যাত মধুমাস জ্যৈষ্ঠতে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি তালের কদর বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। বাঙ্গি-তরমুজের পর ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের কাছে প্রিয় এখন ফল এখন তাল। প্রচন্ড গরমে পিপাসাকাতর পথিকের তৃষ্ণা মেটায় এই তালশাস। তাছাড়া গরমের দিনে এই ফলটির শাস বেশ সুস্বাদু হওয়ায় একটু তৃষ্ণা মেটাতে বিভিন্ন পেশার মানুষ ভিড় করে এই ফলটি কিনতে। অনেকেই রাস্তার পাশে বসে ও দাঁড়িয়ে এ ফল খাচ্ছেন। কেউ খুচরো কিনছেন, কেউবা কাঁধি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার, রাস্তার মোড়, এলাকার বিভিন্ন দোকানের সামনে তালের ফসরা বসিয়েছে বিক্রেতারা। তাতে ভিড় জমিয়েছে ছোট-বড় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পানি-তাল হিসেবে প্রতিটি তাল ১৫/২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা এবং ধারালো দা দিয়ে তা কেটে তালের শাস বের করে দিচ্ছেন তৃষ্ণার্ত ক্রেতাদের।
উপজেলার গোয়ালন্দ বাজার সড়ক কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন রাস্তার পাশে ভ্যান গাড়িতে তালের শাস বিক্রি করছেন স্থানীয় তাল বিক্রেতা সোবাহান সেখ।
তিনি জানান, প্রতিটি তালে থেকে তিন থেকে চারটি শাস বা বিচি হয়। প্রতি পিস এখন ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। তলের শাঁস বা বিচি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পানি জাতীয় তুলতুলে নরম ফল হওয়ায় ছোট-বড় সকলে এই ফল পছন্দ করে।
মোঃ আলাউদ্দিন নামে এক তালের শাস ক্রেতা বলেন, প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠমাসে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি কচি তালের জনপ্রিয়তা ও অনেকটা বেড়ে যায়, বিশেষ করে প্রচন্ড গরম পড়লে এই ফলের কদরও বাড়ে। কচি তালের প্রকৃতি অনেকটা নরম ও পানি জাতীয় হওয়ায় এই ফল বেশ সুস্বাদু হয়।
তালের আরেক শাস ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, গ্রামঞ্চলে মৌসুমী ফল হিসেবে তালের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। মৌসুমী ফলগুলোতে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও ফরমালিন ব্যবহার করায় ফলগুলো মানবদেহে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কিন্তু তালে কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়না। তাই এই ফলটি যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।