Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় মরা পদ্মা থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রির অভিযোগ

॥আবুল হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় মরা পদ্মা নদীর ক্যানেল ঘাট থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়নের অন্তার মোড় পর্যন্ত অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। এতে কয়েকটি গ্রামের ফসলী জমিসহ বাড়ী-ঘর ও অন্যান্য স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে এবং ভুক্তভোগী মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বেপারী পাড়ার কাদের বেপারী, দেবগ্রাম ইউনিয়নের আতর আলী চেয়ারম্যানের পাড়ার মিজানুর রহমান মিনু(সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যের স্বামী, ছোট ভাকলা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের মফিজ উদ্দিন মফি, জাহিদ হোসেন ও হিরা মিয়া প্রমুখ এই অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। মাঝে-মধ্যে পুলিশ  গিয়ে বন্ধ করে দিলেও ২/১ দিন পরই আবার তা শুরু হয়।

দেবগ্রাম ইউনিয়নের আতর আলী চেয়ারম্যানের বাজার এলাকার মাজেদা বেগম নদীতে জমি ও বাড়ী-ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এখন রাস্তার পাশে সরকারী জমিতে ঘর তুলে থাকেন। এখন তার ওই ঘরের পাশ থেকেও ড্রেজিং করে করে মাটি কাটছে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের এক সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের স্বামী মিজানুর রহমান মিনু। কেউ কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকী দেয়াসহ বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখায়। এ ব্যাপারে মাজেদা বেগম বলেন, এভাবে আমার ঘরের পাশ থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে নিতে থাকলে এই আশ্রয়টুকুও নদীর মধ্যে চলে যাবে। আমরা গরীব মানুষ, ভয়ে কিছু বলতে পারি না।

একই ইউনিয়নের তেনাপেচা নতুন গ্রামে মাটি কাটছে মফিজ উদ্দিন ও হিরা মিয়া। তারা পেশাদার বালু ব্যবসায়ী। নিজেদের কয়েকটি ড্রেজার মেশিন রয়েছে। সেগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ওমর আলী মোল্লার পাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, পদ্মা নদী শুকিয়ে এখানে চর জেগেছিল। আমরা ধান চাষ করে খেতাম। কিন্তু ড্রেজার দিয়ে মাটি-বালু তুলে বিক্রি করার কারণে এখন আর ধান চাষ করা যায় না। আবার ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এভাবে মাটি কাটতে থাকলে আমাদের বাড়ী-ঘর নদীতে চলে যাবে। বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও কাদের বেপারী জোর করে মাটি-বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।

অভিযোগ অস্বীকার কাদের বেপারী বলেন, জমির মালিকদের নিকট থেকে হাজার(ঘনফুট) হিসেবে মাটি ক্রয় করে উত্তোলন করে বিক্রি করছি। এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করে নাই।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নাই। কেউ এটা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।