॥আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥ যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করছে। চিৎকার করে তাদের দাবি জানাচ্ছে। টিয়ার গ্যাসের কারণে জোরে কাশি দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের আশংকা বিক্ষোভের কারণে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে। এছাড়া আফ্রিকান আমেরিকানদের জনস্বাস্থ্য এমনিতেই অবহেলিত। এর মধ্যে পুলিশী সহিংসতা এসব জনগোষ্ঠীর জন্যে তৈরি করছে বাড়তি চাপ। এ কারণে তৈরি হচ্ছে হৃদরোগ থেকে ক্যান্সার ঝুঁকি।
গত ২৫শে মে মিনেপোলিসে শেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের নিরস্ত্র এক কৃষাঙ্গ প্রাণ হারালে তা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
হত্যাকান্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে।
ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া হসপিটালের ডাক্তার এবোনি হিলটন দুটি মহামারির হুমকির কথা উল্লেখ করেন। এর একটি কোভিড ১৯ এবং অপরটি পুলিশী নৃশংসতা।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাবে বলেই আমরা আশংকা করছি। কারণ কোন সামাজিক দূরত্ব নেই এবং দুর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ লোক ভুলভাবে তাদের মাস্ক পরছে।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নিয়মিতভাবেই পিপার স্প্রে, টিয়ার গ্যাস ও নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করছে। এর ফলে কাশি ও জ্বলুনী হচ্ছে।
এছাড়া চোখে ড্রপলেট পড়ার কারণেও করোনা ছড়াতে পারে বলে আশংকা করেছেন ওই ডাক্তার। কারণ লোকজন কোন গগলস পরছে না। এদিকে পুলিশ কেন আফ্রিকান আমেরিকান জনস্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি তা নিয়ে গবেষণা করেছেন রাটগার্স ইউনিভার্সিটির ফ্রাংক এডওয়ার্ড।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে কৃষাঙ্গরা শেতাঙ্গদের চেয়ে ২.৫ গুণ বেশি পুলিশের হাতে প্রাণ হারায়।
এই গবেষণার মূল লেখক এডওয়ার্ড বলেন, আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্রে জনস্বাস্থ্যের জন্যে পুলিশের হুমকির বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
এদিকে বিশ্বে করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি পর্যুদস্ত যুক্তরাষ্ট্রে যখন সংক্রমণের মাত্রা কমে আসতে শুরু করেছে তখনই উত্তাল এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইডের মহামারি বিশেষজ্ঞ ব্রানডন ব্রাউন বলেন, বাইরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কমে আসলেও এটি শূন্যে নেমে আসবে না। বিশেষ করে জনগণ যখন সামাজিক দূরত্ব মানতে পারছে না এবং পুলিশিও চার্জের মধ্যে রয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কেবল কোভিড-১৯ থেকেই নয়, রাষ্ট্রীয় নজরদারী থেকেও নিজেকে রক্ষায় মাস্ক পরা গুরুত্বপূর্ণ।
নিউইয়র্কে জরুরী চিকিৎসক রবার্ট গ্লেটার বলেছেন, টিয়ার গ্যাসের কারণে সৃষ্ট এরোসল করোনার বাহক হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব কারণ জনস্বাস্ব্য বিশেষজ্ঞদের খুবই উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিক্ষোভে যারা অংশ নিচ্ছে তাদের অধিকাংশই কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু। নিম্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় থাকা এসব লোক কোভিড-১৯ এর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও তারা মনে করছেন।