॥চঞ্চল সরদার॥ রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিমের পুত্র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম বলেছেন, মুজিববর্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুকে জনগণের মাঝে তুলে ধরতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে সাধারণ মানুষকে নিয়ে পথ চলতে হবে।
গতকাল ১৭ই জানুয়ারী বিকালে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দামুকদিয়া দুর্গাপুর আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘মুজিববর্ষ-২০২০ ঃ বঙ্গবন্ধুকে জানো, বাংলাদেশকে চেনো’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর কথা বললে তারা উজ্জীবিত হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাদের জানতে এবং জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধু শত অত্যাচারের মধ্যেও ভয় পাননি। আদর্শে অবিচল ছিলেন। অনেকেই বলে আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ইসলাম থাকবে না। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের জেলে বন্দী থাকার সময় ফাঁসির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছিলেন, আমি বাঙালী-আমি মুসলমান। আর মুসলমান একবারই মরে। একজন মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব কী বঙ্গবন্ধু তা করে দেখিয়েছেন। মুসলমান হিসেবে আমাদেরকে শুধু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিলেই হবে না, তারা যাতে মান-মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থাও করতে হবে।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে তারা সন্ত্রাস, রাহাজানি, লুটপাট করেছে। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করেছে। দেশের কথা চিন্তা না করে তারা ব্যস্ত ছিল তাদের আখের গোছাতে। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তারা যা করেছে তা দেশবাসী কোনদিন ভুলবে না। এখনও তারা তলে তলে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে দেশটাকে ধ্বংস করে দিবে।
আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম বলেন, শুধু উপরে উপরে আওয়ামী লীগ করলেই হবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ঠিকমতো জানতে হবে। হৃদয়ে ধারণ করে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। ২০০৮ সালে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে রক্ষা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার করেছে। মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে কেউ যেন কারচুপি করতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতিমদের টাকা মেরে কেউ যেন পার পেয়ে না যায় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও, ধর্ষণ-লুটপাট যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। দলে শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশ করে অপকর্মকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অপকর্ম করলে কেউ ছাড় পাবে না। সোনার বাংলাকে শ্মশান হতে দেয়া হবে না। সোনার বাংলাকে সোনার বাংলাই রাখবো।
মদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকন উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডঃ গণেশ নারায়ণ চৌধুরী, প্রধান বক্তা হিসেবে কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো, বিশেষ বক্তা হিসেবে পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডঃ মোঃ উজির আলী শেখ, কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য খায়রুল ইসলাম খায়ের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মজনু, রাজবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডঃ খান মোঃ জহুরুল হক, রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহেদী হাচিনা পারভীন নিলুফা, সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম আলী, মৃগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান সাগর মোল্লা, মাঝবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন লিচু, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ হোসেন মোল্লা, বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হালিমা বেগম, বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, মৃগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন সরদার, রতনদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার সাহা, বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান মোল্লা, সাওরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ঠান্টু, মৃগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাদশা, কালিকাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকমল হোসেন বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা পর্বের শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খ্যাতিমান বাউল শিল্পী শফি মন্ডল ও লালন শিল্পী মৌসুমী ইকবালসহ তাদের দল এবং ঢাকা থেকে আগত অন্যান্য শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।