॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘পলিমারিক উপাদান মুক্ত সবুজ ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণদের সম্পৃক্তায়ণ’ -প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ৪দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন ইউনিস্যাব মডেল ইউনাইটেড ন্যাশন্স-২০১৯।
গত ২২শে ডিসেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যলয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষার্থীরা মোট ৫টি কমিটিতে বিভিন্ন আলোচ্যসূচীতে আলোচনা করে সমাধানপত্র পাস করেন। কমিটিগুলো হলো ঃ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন(ইউএনএফসিসিসি), বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষায়িত কমিটি(এসসিবিএ) এবং আন্তর্জাতিক প্রেস(আইপি)।
কমিটিগুলোর মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) ‘জম্মু কাশ্মীর সংকটে মানবকেন্দ্রীক বিশ্লেষণ ও সমাধান’, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) ‘কার্বন প্রবণতার তীব্রতার উপর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প কাঠামো ও নগরায়নের প্রভাব, কার্যকরী জবাবদিহিতামূলক স্থানীয় প্রশাসন, শান্তি, ন্যায় বিচার ও অন্তর্ভুক্ত সমাজ নিশ্চিতকরণ’, জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি) ‘দূষণমুক্ত বিশ্বায়ন ঃ বিশ্বকে দূষণমুক্ত করার জন্য একটি চুক্তি সরবরাহকরণ ও ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করার জন্য টেকসই কৃষি সংস্কৃতির অনুশীলনকে বাস্তবে রূপায়ণ’ এবং বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষায়িত কমিটি (এসসিবিএ) ‘মৎস ও প্রাণি সম্পদে বিনিয়োগ ঃ টেকসই উন্নয়ন ও ভারসাম্য পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র ও বনভূমি সংরক্ষণের আরেকটি ধাপ’ আলোচন্য সূচীতে সমস্যাবলীর সম্ভাব্য সমাধান বের করেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি শিক্ষার্থীরা।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ইউনিস্যাব বাংলাদেশের সভাপতি ও ইউনিস্যাব মডেল ইউনাইটেড ন্যাশন্স-২০১৯ এর মহাসচিব শ্যামী ওয়াদুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. লাইলা আরজুমান বানু এবং সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউনিস্যাবের বর্তমান ও সাবেক সদস্যগণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সাদেকুল আরেফিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সমাজে যে গতিশীলতা এসেছে সে গতিশীলতার দৃশ্যমান বিষয় হলো সকলে নিজের জায়গা থেকে স্বতন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সময়ে দেখা যায় অনেক বন্ধু একসাথে বসে থাকলেও কেউ কারো সাথে কথা না বলে, আড্ডা না দিয়ে মোবাইল ফোনে সময় দিচ্ছে। এর ফলে মানুষ আত্মকেন্দ্রীক হয়ে যাচ্ছে। একজন মানুষ যতো আত্মকেন্দ্রীক হবে ততো তার কাছ থেকে সামাজিক মূল্যবোধ দূরে সরে যাবে। এসব জায়গা থেকে তরুণ সমাজকে কাটিয়ে উঠতে এ ধরনের ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনগুলো অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্যামী ওয়াদুদ বলেন, চলমান বিশ্বে যে আলোচিত সমস্যা রয়েছে সেই বিষয়ে তরুণ প্রজন্মের ভাবনাগুলো বিকাশের জন্য এই সম্মেলনের আয়োজন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সম্মেলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে তাদের মধ্যে এক ধরনের নেটওয়ার্কিং তৈরী হবে এবং শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এ সম্মেলন শিক্ষার্থীদের কূটনৈতিক হিসেবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে এবং তাদেরকে বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমর্থিত এই সম্মেলনের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে ছিল জাতিসংঘ বাংলাদেশ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, নলেজ পার্টনার হিসেবে ছিল জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র ঢাকা (ইউএনআইসি) ও সেন্টার ফর ম্যান এন্ড মাস্কিউলিনিটিজ স্টাডিজ (সিএমএমএস), বেভারেজ পার্টনার হিসেবে ছিল একমি, রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার হিসেবে ছিল নেস ক্যাফে, আইটি পার্টনার হিসেবে ছিল রাজ আইটি এবং প্রিন্ট মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরষ্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়।