Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়ার ৬টি ফেরী ঘাটে চলছে শুষ্ক মৌসুমের লো-ওয়াটারের কাজ

॥মাহফুজুর রহমান॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ৬টি ফেরী ঘাটে বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমের লো-ওয়াটারের কাজ চলছে।
ফেরী ঘাটগুলোর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ফেরী ঘাট ২টি এবারের বর্ষা মৌসুমের সময় নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। অপর ৪টি ফেরী ঘাটের মধ্যে ৬ নম্বর ফেরী ঘাটটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে ৩টি ফেরী ঘাট দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়া ১ ও ২ নম্বর ফেরী ঘাট পুনরায় চালু করার জন্য এ্যাপ্রোচ(সংযোগ) সড়কের কাজ শুরু করেছে। তারা আশা করছে, আগামী ২দিনের মধ্যেই দৌলতদিয়ার ৬টি ফেরী ঘাট ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হবে।
এদিকে, ৬ নম্বর ফেরী ঘাটের ভাটিতে আরও ২টি নতুন ফেরী ঘাট নির্মাণের জন্য সম্প্রতি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল ৩০শে নভেম্বর দুপুরে দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমের চেয়ে বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় প্রায় ১৮ ফুট পানি কমে গেছে। ১নম্বর ফেরী ঘাটের এ্যাপ্রোচ সড়ক কেটে লো-ওয়াটার লেবেল করার জন্য হরদম কাজ চলছে। আগামী ২ দিনের মধ্যে ঘাটটি পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে ২নম্বর ফেরী ঘাটের লো-ওয়াটার লেবেলের কাজ শেষ হলেও ঘাটে এখনো পন্টুন যুক্ত করা হয়নি। পন্টুন যুক্ত করে দেওয়া হলেই ঘাটটি চালু হবে। ৩ ও ৪ নম্বর ফেরী ঘাটের মাঝামাঝিতে নতুন করে ৬ নম্বর ঘাটটি চালু করার জন্য কাজ চলছে। পুরাতন ৬ নম্বর ঘাটটি এ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে লো-ওয়াটার লেবেলের কাজের উপযোগী নয় বলেই ঘাটটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ফেরী ঘাট সচল রয়েছে। সেগুলো দিয়ে ফেরীতে যানবাহন উঠা-নামা করতে দেখা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র টেকনিশিয়ান এ্যাসিস্ট্যান্ট শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদায়ী বর্ষা মৌসুমে দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে ৮.৭৭ মিটারের হাই ওয়াটার স্টেজ(লেবেল) দেখা যায়। বর্তমানে পানি কমে তা ৪.২৪ মিটারে নেমে এসেছে। গাণিতিক সূত্র মতে, প্রায় সাড়ে ৪মিটার অর্থাৎ ১৫ ফুট পানি কমে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই দৌলতদিয়া ঘাটের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬ নম্বর ফেরী ঘাটের ভাটির দিকে আরও ২টি নতুন ঘাট নির্মাণের প্রস্তাবনা হয়েছে। সেই আলোকে আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক(বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, বর্তমানে ১৫টি ছোট-বড় ফেরী দিয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। শীত মৌসুম হওয়ার সকালে ও রাতে কুয়াশা পড়ছে। ঘন কুশায়া দেখা দিলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার জন্য দৌলতদিয়া ঘাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদায়ী বর্ষা মৌসুমে আমরা দৌলতদিয়ার সবগুলো ফেরী ঘাট ব্যবহার করতে পারি নাই। ঘাটগুলো যাতে সচল রাখা যায় সে জন্য শুষ্ক মৌসুমে জরুরীভাবে কাজ করা হচ্ছে। ৬ নম্বর ফেরী ঘাটের ভাটিতে আরও ২টি নতুন ঘাট নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।